এই সময়: হিরোশি ইবুসুকি। যখন কলকাতায় পা দিয়েছিলেন, ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা ভেবেছিলেন, জাপানি বোমায় বুঝি ধ্বংস হবে প্রতিপক্ষ। কোথায় কী! বাস্তবে দেখা গেল, বোমা তো দূর, ভুঁই পটকাও নন তিনি! রবিবার গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে সুপার কাপের ফাইনালে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে হেডে যে গোল মিস করেছেন, তার হয়তো কোনও ক্ষমা নেই। এক সময়ে লাল হলুদ জার্সিতে ক্লাবকে বহু ট্রফি এনে দেওয়ার ‘নায়ক’ আলভিটো ডি’কুনহা তো বলেই ফেললেন, ‘হিরোশির চেয়ে খেপের ফুটবলাররা অনেক ভালো!’ আর এক প্রাক্তন রহিম নবির ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য, ‘হিরোশির বদলে আমিও এখন অনেক ফিট। আমি খেললে গোল করে দিতাম।’
প্রথমে ক্লেইটন সিলভা, তার পরে দিমিত্রি দিয়ামান্তাকোস। এখন হিরোশি। স্ট্রাইকারদের নিয়ে লাল হলুদে পরীক্ষা চলছেই। টিম ভালো খেললেও গোল করার অভাবে ট্রফি অধরাই থেকে যাচ্ছে। আলভিটো যেমন বলছেন, ‘হিরোশির তুলনায় দিয়ামান্তাকোস সব সময়ে একশোগুণ এগিয়ে থাকবে। দিয়ামান্তাকোসকে অবশ্যই আরও সময় দেওয়া উচিত ছিল। এই যে বারবার একই পজিশনে একজনকে সরিয়ে অন্য একজনকে আনা হচ্ছে, এতে তো খরচও বিশাল। একই কাজে তিনবার টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। জানি না, বর্তমান ম্যানেজমেন্ট কী ভাবছে!’
নবি মনে করছেন, শুধু হিরোশিকে নয়, কোচ অস্কার ব্রুজ়োর সঙ্গে এ বার ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ করে দেওয়া উচিত। তিনি অনেক আগে থেকেই অস্কারকে সরানোর কথা বলে আসছিলেন। এ দিন জোরালো ভাবে নবি আবারও বললেন, ‘অস্কার অনেক সময় পেয়েছেন। কিন্তু ট্রফি দিতে পারেননি। কোচকে বিচার করা হয় তাঁর ট্রফির সাফল্যে। তা ছাড়া, স্ট্র্যাটেজিতেই বা কী আছে? গোয়ার বিরুদ্ধে ৯০ মিনিটে যে ম্যাচ শেষ করা উচিত ছিল, সেই ম্যাচ চলে গেল সাডেন ডেথে! কোচের ভুল না হলে হয় না।’
আলভিটো এবং নবির এক সুর, ‘এই সব বিদেশিদের অস্কারই এনেছেন। তা হলে ভালো–খারাপের দায় তো তাঁকে নিতেই হবে। কেন দিমিত্রিকে সরানো হলো? কেন হিরোশির মতো একজনকে নিয়ে আসা হলো? এই সব প্রশ্নের উত্তর অস্কারই দিতে পারবেন।’
সর্বোচ্চ পর্যায়ে সাফল্য পাওয়ার পরেও মোহনবাগান তাদের কোচ হোসে মোলিনাকে সরিয়ে দিয়েছে। যদিও অস্কার ট্রফি দিতে না পারলেও এখনই তাঁকে সরানোর ভাবনা নেই। আইএসএল হবে কি হবে না, তা জানা নেই। তাই অস্কার নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তও নিতে চায় না ম্যানেজমেন্ট। একই ভাবে হিরোশির ক্ষেত্রেও ধীরে চলো নীতি। আইএসএলই যদি না হয়, কোচ–ফুটবলার বদলে লাভ কী!