• গীতাপাঠের ময়দানে প্যাটিস বিক্রেতাকে বেধড়ক মার!
    আজকাল | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্রিগেড। ব্রিগেড চত্বর। বছরের যে কোনওদিকে সেদিকে নজর রাখলে দেখা মিলতেই পারে কাচের বক্সে প্যাটিস নিয়ে ঘুরে বেড়ানো বিক্রেতার। ধর্মতলার মোড়ের দিকে এগিয়ে এলে তো, দাঁড়িয়ে থাকতেই দেখতে পাবেন। উত্তর কলকাতা, ভরা হাতিবাগানেও দেখা মেলে তাঁদের। পথ চলতি বহু মানুষ, নিত্যদিন সেখান থকে আমিষ, নিরামিষ প্যাটিস কিনে খানও। কিন্তু আমিষ প্যাটিস বিক্রির অপরাধে যুবককে বেধড়ক মার বিজেপির গীতাপাঠের ময়দানে! ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যেই ব্যাপকহারে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিন্দা চতুর্দিকে। যদিও ওই ভিডিও'র সত্যতা যাচাই করেনি আজকাল ডট ইন।

    ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কয়েকজন মিলে এক ব্যক্তিকে চড়-থাপ্পড় দিচ্ছেন। গীতাপাঠের ময়দানে 'চিকেন' বিক্রি কেন? ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে 'আমিষ খাবার  বিক্রি কেন?' বারবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। কান ধরে ওঠবোস করানো হয়েছে। একজনকে গলা চড়িয়ে নাম জিজ্ঞাসা করতেও শোনা গিয়েছে।

    ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল  কংগ্রেস। সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, 'বিক্রেতারা তো আমিষ-নিরামিষ ধরে বিক্রি করতে অভ্যস্ত নন। রোজ নিজেদের পণ্য নিয়ে বিক্রি করেন। যাদের প্যাটিস খাওয়ার নয়, তারা খাবেন না। কিন্তু বিক্রেতাকে মারবেন কেন? ওই জায়গায় কর্মসংস্থান, আয়ের জায়গা। কেউ কিছু না বুঝে হঠাৎ মারলেন কেন?'

     ঋজু দত্ত বলছেন, 'বিজেপি কেবল বাংলার ভোট চায় না।  বিজেপি চায় বাংলাকে কন্ট্রোল করতে। কে কী খাবে, কে কী করবে, কে কাকে বিয়ে করবে, সম্পর্ক রাখবে, সব কন্ট্রোল করতে চায়।' 

    অরূপ চক্রবর্তী বলছেন, 'এই আক্রমণ কেবল এক প্যাটিসবিক্রতা, তাঁর ধর্ম নিয়ে আক্রমণ, এই আক্রমণ বাঙালির উপর। রাজ্যে ক্ষমতায় নেই এরা, ক্ষমতায় আসা দূরস্ত, পরের বার বিরোধী দল থাকবে কি না তার ঠিক নেই, তাতেই এরা আক্রমণ করছে আমাদের খাদ্যাভাসের উপর।'

    দিল্লিতে মাছ-মাংসর দোকান বিক্রি করার প্রসঙ্গও টেনে আনেন অরূপ। রবিবারের দুপুর, গড়ের মাঠ আর প্যাটিস বিক্রাতদের প্রসঙ্গও নিজের বক্তব্যে টেনে আসেন অরূপ। দুর্গাপুজোর সময় বিরিয়ানির দোকানে ভাঙচুরের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'এই কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রশাসন নিশ্চয়ই নেবে।'

    তারপরেই বাঙালিদের কাছে অনুরোধ তৃণমূল নেতার, এখনই এসব রুখে না দিলে, আগামী দিনে কী খাবেন, কী পরবেন, কোন সংস্কৃতি পালন করবেন তা নির্ধারণ করেতে চাইছে বিজেপি-আরএসএস। আঘাত হানতে চাইছে বাংলার সংস্কৃতির উপর। তৃণমূল নেতার আর্জি, সজাগ হতে হবে সময় থাকতে থাকতেই। 
  • Link to this news (আজকাল)