অয়ন ঘোষাল: মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করে হইচই ফেলে দিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবির। সাড়াও পাচ্ছেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। রাতারাতি রীতিমত হেভিওয়েট হয়ে গিয়েছেন হুমায়ুন। এসব তো আছেই। এর পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভরতপুরের বিধায়ক। একথা তিনি নিজেও বলেছেন। এখন নিজের নিরাপত্তার জন্য হায়দরাবাদ থেকে আনছেন ৮ বাউন্সার। ভাড়া করছেন হেলিকপ্টার। ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী-সহ কলকাতাতেও আসবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
কয়েকদিন ধরেই হুমায়ুন বলেছেন, তিনি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার জন্য আবেদন করবেন। অর্থাত্ তিনি রাজ্যের নিরাপত্তার উপরে খুব একটা আস্থা রাখছেন না। কারণ তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। সেই কারণেই ৩ মাসের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া করা, হায়দরাবাদ থেকে বাউন্সার আনানো। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার কারণ কলকাতায় এমএলএ হোস্টেলে না থেকে থাকবেন নিউ টাউনের পাঁচতারা হোটেলে। এমনটাই সিদ্ধান্ত হুমায়ুন নিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
নিরাপত্তা নিয়ে হুমায়ুন সংবাদমাধ্য়মে বলেন, নওশাদ সিদ্দিকি যদি এত সিকিউরিটি পেতে পারে তাহলে আমি কেন নয়? আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে, বলছে বাবরি মসদিজের স্বপ্ন পূরণ হবে না। কিন্তু বাবরি মসজিদ আমি তৈরি করবই। এই চ্যালেঞ্জ আমি নিয়েছি। আল্লাহ আমার সঙ্গে রয়েছেন। উনিই আমাকে রক্ষা করবেন। তার সঙ্গে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তাই আমি একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি।
গত ৫ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের আগের দিন তিনি জি ২৪ ঘণ্টাকে বলেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন। নিরাপত্তার জন্য তিনি যা করছেন তা বেশ চাঞ্চল্যকর। আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার ব্যবহার করেন। সেটাও খুব কম। যখন কোনও দুর্গম রাস্তা বা লম্বা সফর করতে হয় তখন ব্যবহার করা হয়। সেই কপ্টারের খরচ সরকার বহন করে। আর হুমায়ুন কবির ব্যক্তিগত টাকায় চপার ভাড়া করছেন ৩ মাসের জন্য। কারণ হুমায়ুনের বক্তব্য তার গাড়িটা বুলেটপ্রুফ নয়। তিনি সড়ক পথে জেলার বাইরে বা রাজ্যের বাইরে যাবেন। মোট ৩টি বাবরি মসজিদ তৈরি করবেন বলবে জানিয়েছেন হুমায়ুন। একটি মুর্শিদাবাদে। বাকীগুলি তৈরি হতে চলেছে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে। এর জন্য তাঁকে বিভিন্ন জেলা ও রাজ্যের বাইরেও যেতে হবে। সেই কথা মাথায় রেখেই একটি চপার বুক করেছেন হুমায়ুন। যাতে লাগোয়া রাজ্যগুলিতে সহজে ও নিরাপদে যেতে পারেন।
দল সাসপেন্ড করেছে হুমায়ুন কবিরকে। তার পরেই নিয়মরক্ষার খাতিরে হুমায়ুনের সঙ্গে মাত্র ২ জন অস্ত্রধারী পুলিস রেখে দিয়েছে রেজিনগর থানা। হুমায়ুনের আশঙ্কা কোনও হামলা হলে তাকে এই ২ আর্মড পুলিস বাঁচাতে পারবে না। সেই আশঙ্কা থেকেই হায়দরাবাদ থেকে ২ জন আর্মড-সহ মোট ৮ জন প্রশিক্ষিত বাউন্সার উড়িয়ে আনছেন তিনি। হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, আগামী কয়েকদিন কলকাতায় একটি পাঁচতারা হোটেলে ঘাঁটি গাড়তে চলেছেন হুমায়ুন। সেখানেও বাউন্সারদের জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। সবেমিলিয়ে একটা মেগা বাজেটের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে যাচ্ছেন হুমায়ুন কবির।