সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: এসআইআরের কাজের মাঝেই বিএলও-দের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি উঠল সুপ্রিম কোর্টে। এনিয়ে মামলাকারীর আইনজীবীর দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর নির্বাচন কমিশনকেই নিজেদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্বাচন কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার-সহ বিষয়টি নিয়ে সবপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছে। বিএলও-দের সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কী মতামত, সকলের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল।
মঙ্গলবার সনাতনী সংসদের তরফে আইনজীবী ভিভি গিরি সুপ্রিম কোর্টে বিএলও-দের সুরক্ষা নিয়ে সওয়াল করতে গিয়ে ২০২৩-২০২৪ সালের হিংসার কথা উল্লেখ করে। তাঁর বক্তব্য, বাংলায় হিংসার ইতিহাস রয়েছে। বিএলও-দের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলিকে হুমকি দিচ্ছে। বিএলওদের রক্ষা করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হোক অথবা কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে তাঁদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হোক। তাতে বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, ”আপনি কি বলতে চাইছেন যে বাংলায় অবস্থা এতটাই খারাপ যে তার জন্য আমাদের আলাদা করে নির্দেশ দিতে হবে? নাকি সব রাজ্যের জন্যই এটা করতে হবে? সেটা হলে সব রাজ্যের পুলিশকে কমিশনের আওতায় দিয়ে দিতে হয়! কিন্তু সেটার জন্য আগে আপনাদের নিজেদের দাবি প্রমাণ করতে হবে। তারপর আমরা কমিশনের মতামত জানতে চাইতে পারি।”
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী সওয়াল করেন, বিএলও-দের রাজনৈতিক দলগুলি চাপ দিচ্ছে। বিএলওদের ঘেরাও করা হচ্ছে। এমনকী কলকাতায় সিইও অফিস ঘেরাও করেছিল বিএলও-দের একাংশ। তাঁর সওয়াল শুনে প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ”আমরা প্রত্যেক বিএলও-র সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত। তাঁরা এখন আপনাদের কর্মী। তাঁদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা কী করছেন? তাছাড়া আমাদের কাছে তো আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বলেছিলেন যে বিএলও-দের উপর এত চাপ, সেই কারণে তাঁরা কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করেছেন।” কমিশনের আইনজীবী পালটা বলেন, ”আমরা রাজ্য পুলিশকে আমাদের অধীনে নিয়ে নিতে পারি অথবা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারি।” তাতে বিচারপতি বাগচি সাফ জানান, ”সেটা নির্বাচনের সময় সম্ভব।” এরপরই নির্বাচন কমিশন, রাজ্য সরকার-সহ সবপক্ষকে নোটিস জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।