‘ইন্ডিগো সংকট থেকে শিক্ষা নিন’, প্রবল ‘কাজের চাপে’ রেলকে সতর্কবার্তা লোকো পাইলটদের
প্রতিদিন | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইন্ডিগোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে ভারতীয় রেলে! সম্প্রতি এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়ে কেন্দ্রকে বার্তা দিল অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন (AILRSA)। তাঁদের দাবি, পাইলটদের কাজের চাপ কমাতে সরকার যে নিয়ম লাগু করেছে সেই একই নিয়ম রেলের ক্ষেত্রেও লাগু হোক। কারণ, রেলের লোকো পাইলটরাও একই সমস্যায় জর্জরিত। তাঁদের ক্লান্তি রেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। সরকার পদক্ষেপ না করলে রেলওয়েতেও ইন্ডিগোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
ভারতীয় রেলের লোকো পাইলটে বিরাট শূন্যপদ ও শ্রম আইন সংস্কারে বিলম্বের কারণে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছেন লোকো পাইলটরা। এই পরিস্থিতির মাঝেই কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেওয়া হল লোকো পাইলটদের তরফে। যেখানে জানানো হয়েছে, অতিরিক্ত কাজের চাপ ইন্ডিগোর মতো গোটা রেল ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করতে পারে। বিমান চালকদের কাজের সময় নির্ধারণে সরকার কড়া পদক্ষেপ নিলেও রেলের ক্ষেত্রে দ্বিচারিতা করা হচ্ছে। সংগঠনের অভিযোগ, সরকারের বিরুদ্ধে কর্মীরা আন্দোলন করলে জনস্বার্থ বা জরুরি পরিষেবা আইনকে হাতিয়ার করে দরকার আন্দোলন দমন করে ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়। অথচ দশকের পর দশক ধরে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিকভাবে লোকো পাইলটদের কাজের সময় নির্ধারণ করা হচ্ছে।
রেল দপ্তরের কাছে সংগঠনের স্পষ্ট দাবি, এফআরএমএস ভিত্তিক কর্মঘণ্টা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টার ডিউটি, নির্দিষ্ট বিশ্রামের সময়সূচি, প্রতিটি শিফটের পর অন্তত ১৬ ঘণ্টা বিশ্রাম ও দৈনিক বিশ্রামের পাশাপাশি সাপ্তাহিক ছুটির ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে। শুধু তাই নয়, তাঁদের দাবি, লোকো পাইলটদের সাপ্তাহিক বিশ্রাম ৫২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৪৮ করা হয়েছে। তার মধ্যেই আবার জুড়ে দেওয়া হয়েছে ১৬ ঘণ্টার দৈনিক বিশ্রাম। ২০১০ সালে এই সিদ্ধান্তে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কর্নাটক হাই কোর্ট। তবে পরিস্থিতি আজও বদলায়নি। পাশাপাশি সংগঠনের দাবি, অবিলম্বে সরকার যদি এই বিষয়ে পদক্ষেপ না করে সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে এবং রেলে ইন্ডিগোর মতো অচলবস্থা তৈরি হবে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিগোতে ব্যাপক অচলবস্থা ও হাজার হাজার যাত্রীর সমস্যার নেপথ্যে ছিল কেন্দ্রের নয়া নিয়ম। গত নভেম্বর থেকে কার্যকর হয় সংশোধিত ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন (এফডিটিএল) ও ফ্যাটিগ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এফআরএমএস)। যেখানে পাইলটদের কাজের সময় ও ছুটির সময় নির্ধারিত করে দেওয়া হয়। এর জেরে ব্যাপক কর্মী সংকটে অচল হয়ে পড়ে দেশের বিমান ব্যবস্থা। অন্যদিকে, রেলের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধাজনক নয়। রিপোর্ট বলছে, রেলে লোকো পাইলটের সংখ্যা হওয়া উচিত ১.৪৭ লক্ষ। কিন্তু বাস্তবে তা রয়েছে ১.১৫ লক্ষ। অর্থাৎ ৩০হাজার পদ এখনও খালি।