১০০ দিনের কাজে বাংলাকে এক টাকাও দেয়নি কেন্দ্র! অভিষেকের প্রশ্নে বঞ্চনা মানল কেন্দ্র
প্রতিদিন | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের অভিযোগ, বাংলার মানুষকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। সেই অভিযোগ যে মিথ্যা নয়, সেটা এবার স্পষ্ট হয়ে গেল কেন্দ্রের পরিসংখ্যানেই। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক যে তথ্য দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবর্ষে অন্য সব রাজ্যের জন্য ১০০ দিনের কাজে কমবেশি অর্থ বরাদ্দ করা হলেও বাংলার বরাদ্দ শূন্য!
সংসদে অভিষেক জানতে চেয়েছিলেন, ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কোন রাজ্যের কত টাকা বকেয়া রয়েছে ১০০ দিনের কাজে। প্রতিটি রাজ্যের বকেয়া মেটাতে কতটা সময় নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজে ব্যবহৃত পণ্যের বকেয়া কত? সময় মত বেতন মেটানোর কোনও পরিসংখ্যান জনসমক্ষে আছে কি? থাকলে সেটা প্রকাশ করা হোক।
অভিষেকের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসওয়ান জানিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা সরাসরি শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়। দৈনিক বেতন দৈনিক হিসাবেই বরাদ্দ করা হয় রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী। নতুন অর্থ বছর শুরুর আগেই আগের অর্থবর্ষের সব টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ২০২৪-২৫ পর্যন্ত সব বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে বাংলা ছাড়া। অর্থাৎ, বাংলার টাকা যে মেটানো হয়নি, সেটা স্পষ্ট ভাষায় স্বীকার করে নিল কেন্দ্র। কেন্দ্র জানিয়েছে, বাংলা বাদে অন্য সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সব মিলিয়ে ৬৯ হাজার কোটিরও বেশি টাকা পেয়েছে। এর মধ্যে নেই বাংলা। এখানেই শেষ নয়, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাকি অংশের জন্য যে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, তাতেও বাংলার নাম নেই। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য বলছে, ডিসেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত কাজের জন্য আরও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও বাংলার নাম নেই।
উল্লেখ্য, মনরেগা নিয়ে এবার সংসদ অধিবেশনের শুরু থেকেই সরব তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের দাবি, সব মিলিয়ে ওই খাতে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা প্রাপ্য বাংলার। তাৎপর্যপূর্ণভাবে কলকাতা হাই কোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের সব ১০০ দিনের বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে কেন্দ্রকে। তারপরও লাগাতার অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে কেন্দ্র। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আরও জোরালো হচ্ছে। এর মধ্যেই কেন্দ্রের স্বীকারোক্তি।