মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যদের নিরাপত্তা গুলিয়ে ফেলা যায় না, দাবি বিধানসভা কর্তৃপক্ষের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। সেখানে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ জানায়, মুখ্যমন্ত্রীর পদ সাংবিধানিক পদ, ফলে তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে অন্য কোনও সদস্যের নিরাপত্তা তুলনা করা চলে না। তাঁদের বক্তব্য, বিরোধী দলনেতার পদ সাংবিধানিক পদ নয়। তাই দুই ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য হতে পারে না। এই দাবি উত্থাপন করার পাশাপাশি আদালত অবমাননার মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ।
তবে বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, ‘আপনি কি বলছেন বিধানসভার ভিতরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রয়োজন? তা হলে শাসক দলের নিরাপত্তা দরকার, বিরোধী দলের নয়?’ আদালতের এই মন্তব্যের পর মামলার গুরুত্ব আরও বেড়ে গিয়েছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
বিধানসভায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন ও বিরোধী বিধায়কদের নিরাপত্তা সীমিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই উত্তেজনা বাড়তে শুরু করেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, বিজেপি বিধায়কদের নিরাপত্তা নিয়ে বৈষম্য করা হচ্ছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলছে। এই অভিযোগের পরেই মামলাটি আদালতে ওঠে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের আগস্টে এই মামলার আগের শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিধানসভার আইন অনুযায়ী জারি করা নোটিস বলবৎ থাকবে। সেই সঙ্গে তিনি বিশেষভাবে জানান, বিধানসভার প্রতিটি সদস্যের ক্ষেত্রে নিয়ম যেন সমানভাবে প্রযোজ্য হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে বিধানসভার সচিবের দপ্তরকে।
কিন্তু এরপর সেপ্টেম্বরে শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষ আদালতে জানানো হয়, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের দাবি, এই কর্মকাণ্ডে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘিত হয়েছে এবং স্পিকার আদালত অবমাননা করেছেন। শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘বিধানসভা জানিয়েছিল কোনও বিধায়ক নিরাপত্তা রক্ষী নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। তা হলে মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়ে ঢুকলেন?’
এখন রাজনৈতিক মহলের নজর আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে। কারণ এই মামলার রায় শুধু নিরাপত্তা বিধির ব্যাখ্যা নয়, বিধানসভার অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায়ও বড় ভূমিকা নিতে পারে।