জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে এবার সিলমোহর দিল কেন্দ্রই! মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একাধিকবার বাংলায় একশোর দিনের প্রকল্পের টাকা আটকে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরব অভিষেকও। সরাসরি বললেন না বটে। তবে সংসদের কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসওয়ান জবাবেই স্পষ্ট হয়ে গেল যে, ১০০ দিনের কাজে কমবেশি বিভিন্ন রাজ্য পেলেও বাংলা এক পয়সাও পায়নি।
সংসদের এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। এদিমন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজে কোন রাজ্যের কত টাকা বকেয়া? রাজ্যগুলি বকেয়া মেটাতে কত সময় দেওয়া হয়েছে? সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজে ব্যবহৃত পণ্যের বকেয়া কত'? বলেন, 'সময় মত বেতন মিটিয়ে দেওয়ার কোনও পরিসংখ্যান রয়েছে কি? থাকলে প্রকাশ করা হোক'।
অভিষেকের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসওয়ান জানান, ১০০ দিনের কাজের টাকা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়। দৈনিক বেতন দৈনিক হিসাবেই বরাদ্দ করা হয় রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী। নতুন অর্থ বছর শুরুর আগেই আগের অর্থবর্ষের সব টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাকে যে টাকা দেওয়া হয়নি, তা অবশ্য উল্লেখ করেননি মন্ত্রী।
কেন্দ্রের পরিসংখ্যান দেখেই স্পষ্ট. ২০২৪-২৫ পর্যন্ত সব রাজ্যের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে শুধুমাত্র বাংলা ছাড়া। বাংলার টাকা মেটানো হয়নি। অর্থাৎ বাংলার ১০০ দিনের টাকা মেটায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলা বাদে অন্য সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সব মিলিয়ে ৬৯ হাজার কোটিরও বেশি টাকা পেয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাকি অংশের জন্য যে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, তাতেও বাংলার নাম নেই। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য বলছে, ডিসেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত কাজের জন্য আরও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানেও নেই বাংলার নাম।
এদিকে একশোর দিনে কাজে নয়া শর্ত দিয়েছে কেন্দ্র। এদিন কোচবিহারের সভামঞ্চে দাঁড়িয়েই রীতিমতো নাটকীয় ভঙ্গিতে সেই কাগজ ছিঁড়ে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নতুন শর্তাবলীকে 'অসম্মানজনক'। মুখ্যমন্ত্রী বলেন,, 'হঠাৎ করে গত পরশু দিন একটা চিঠি দিয়েছে আমাদের এক বছর পর। তাতে বলছে ৬ ডিসেম্বর থেকে শর্ত দিয়েছে। ত্রৈমাসিক লেবার বাজেট দেখাতে হবে, সময় কোথায়? এটা ডিসেম্বর মাস, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন'। সঙ্গে ঘোষণা, 'আবার আমরা ক্ষমতায় আসব। কর্মশ্রীর ৭৫ দিন এবার কাজ হয়েছে। ৭০ দিন হয়ে গিয়েছে। আরও ৭৫ থেকে ৮০ দিন করব। ১০০ দিনের কাজ বাংলাই করবে। এই কাগজটা ভ্যালুলেস। এর কোনও ভ্যালু নেই। আমি এটাকে মনে করি অসম্মান, অপমান'।