• টাকা তুলতে পারছেন না সমবায় সমিতির গ্রাহকরা, বিজেপি ঘনিষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে বিপুল টাকা অনিয়মের অভিযোগ
    এই সময় | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • তিল তিল করে টাকা জমিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের স্থানীয় বাসিন্দারা। ভেবেছিলেন, ভবিষ্যতে সুরাহা হবে। কিন্তু বদলপুর সমবায় সমিতি থেকে কেউ সেই টাকা তুলতে পারছেন না বলে অভিযোগ। অসংখ্য স্থানীয় গ্রাহকের দাবি, সমবায়ের ম্যানেজার বিজেপির বড় নেতা। সম্পাদকও বিজেপি ঘনিষ্ঠ। তাঁরাই যোগসাজস করে টাকা আটকে রেখেছেন। এমন অভিযোগে আরসিএস ও সিআই দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সমবায় সমিতির ম্যানেজার এবং সম্পাদক।

    জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত মজুমদারই বদলপুর সমবায় সমিতির সম্পাদক। ম্যানেজার এলাকারই বাসিন্দা গোবিন্দ রায়। গ্রাহকদের অভিযোগ, সমবায় সমিতি থেকে বেশ কয়েক জন বিজেপি নেতাকে বড় অঙ্কের ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা তাঁরা শোধ করেননি। তার প্রভাব পড়ছে গ্রাহকদের উপরে। বহু কষ্ট করে জমানো টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

    ব্রজবল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এই সমবায় ব্যাঙ্কে প্রায় ৭০০ গ্রাহক রয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকা জমা রেখেছেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ, অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারছেন না কেউ। স্থানীয় বাসিন্দা এবং সমবায় ব্যাঙ্কের গ্রাহক বিপদতারণ কবিরাজের কথায়, ‘টাকা তুলতে গেলে ম্যানেজার আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু বলে ঘোরাচ্ছেন। অনেকে বিপদে পড়ে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। তাঁরাও পাননি। বাধ্য হয়েই আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।’

    এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপড়েনও। সরাসরি বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে বংশীহারি জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা তৃণমূল সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, ‘এমনটা চলতে দেওয়া যায় না। ঘটনার সঙ্গে বিজেপি নেতারা যুক্ত। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক। গ্রাহকদের টাকা ফেরাতেই হবে।’ এই নিয়ে মুখ খুলতে চাননি জেলা বিজেপি সভাপতি নারায়ণ স্বরূপ চৌধুরি। তিনি শুধু বলেন, ‘এখনই কিছু বলতে পারছি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’

    তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বদলপুর সমবায় সমিতির সম্পাদক তথা দেবব্রত মজুমদার এবং ম্যানেজার গোবিন্দ রায়। তাঁরা বলেন, ‘পুরো বিষয়টা প্রশাসন জানে। আমরা কিছু বলব না।’ এই পরিস্থিতিতে আশা-নিরাশার দোলাচলে দিন কাটছে সমবায় সমিতির ৭০০ গ্রাহকের।

  • Link to this news (এই সময়)