• ব্ল‍্যাকমেলের ফাঁদে আত্মঘাতী স্বামী? রিলসে অভিনয়ের তত্ত্ব উড়িয়ে অভিযোগ স্ত্রীর
    এই সময় | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, মালদা: প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, গত শুক্রবার রাতে রিলস বানানোর সময়ে মৃত্যুর অভিনয় করতে গিয়ে 'অসাবধানতাবশত' গলায় ফাঁস লেগে মৃত্যু হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের মোবারকপুর এলাকার বাসিন্দা দুর্লভ সাহার। গোটা ঘটনা মোবাইলে লাইভ রেকর্ডিং হয়ে যায়। ঘটনাটি নিয়ে হইচই পড়ে যায় মালদায়। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁর স্ত্রী মৌসুমি সাহা 'বোমা ফাটিয়েছেন'। তাঁর অভিযোগ, এক মহিলা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করে ব্ল‍্যাকমেল করছিলেন তাঁর স্বামী দুর্লভকে। সেই চাপ সহ্য করতে না-পেরেই নাকি স্বামী আত্মঘাতী হন!

    ওই মহিলা কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের নাম সালমা সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে এ দিন হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৌসুমি। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামী-স্ত্রী প্রায় এক বছর আগে আলাদা থাকতে শুরু করেন। এর কারণ ছিলেন সালমা। মৌসুমি পুলিশকে জানিয়েছেন, দুর্লভ এবং সালমা একই বেসরকারি কোম্পানিকে কাজ করতেন। পাশাপাশি দু'জনেই ছিলেন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ জনপ্রিয়তাও ছিল দু'জনের। মাঝেমধ্যেই সালমা এবং দুর্লভ কোল্যাবোরেশন (যৌথ ভাবে) করে ভিডিয়ো বানাতেন।

    মৌসুমির দাবি, এর মাধ্যমেই তাঁর স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে সালামর। একটা সময়ের পরে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কেও জড়ান দুর্লভ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে দম্পতির মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এক বছর আগে দু'জনে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। মৌসুমিরর দাবি, সালমা এবং দুর্লভের কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ছিল অভিযুক্তর। সেই সব ছবি দেখিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা চেয়ে সম্প্রতি ব্ল‍্যাকমেল করছিলেন সালমা। এমনকী, টাকা না-দিলে ওই মহিলা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ারও হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ মৌসুমির।

    তাঁর দাবি, এই চাপ সহ্য করতে না-পেরেই এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন দুর্লভ। সে দিন ভিডিয়োতে যা দেখা গিয়েছে, তা 'অসাবধানতাবশত' নয়, বরং স্বামী জেনেবুঝেই ওই পথ বেছে নিয়েছিলেন বলে দাবি মৌসুমির। দম্পতির দুই নাবালিকা সন্তান রয়েছে। তারা মৌসুমির সঙ্গে চাঁচলের থাকে। দুর্লভ সম্প্রতি ঘন ঘন মেয়েদের দেখতে যাওয়া শুরু করেন। স্ত্রীর দাবি, তখনই স্বামী তাঁকে ব্ল‍্যাকমেল সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। এমনকী, দুর্লভ সংসারে ফিরতে চেয়েছিলেন বলে জানান স্ত্রী। কিন্তু তার আগেই...। ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, যদি ব্ল‍্যাকমেলের চাপ সহ্য করতে না-পেরেই দুর্লভএই ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন, তা হলে সে দিন ভিডিয়োতে সে কথা জানাননি কেন? পুলিশ মৌসুমির দাবিটিকেও আতশকাচের তলায় রেখে তদন্ত চালাচ্ছে। এ দিকে ঘটনার পর থেকে সালমা বেপাত্তা। পুলিশ তাঁর হরিশ্চন্দ্রপুরের বাড়িতে খোঁজখবর করেছে। চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে পাকড়াও করতে পারলে ঘটনায় আরও তথ্য উঠে আসবে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।

  • Link to this news (এই সময়)