• নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতি কেন বাদ, তোপ রাহুলের
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: আলোচনার বিষয় ছিল, সার্বিক নির্বাচনী সংস্কার। কিন্তু আদতে তা দাঁড়িয়ে গেল এসআইআর। স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন। এমনকি বিজেপির বক্তা বিহারের সাংসদ সঞ্জয় জয়সওয়ালও সমানে বলে গেলেন এসআইআর নিয়েই। ফলে প্রাথমিকভাবে বিরোধীরা এই আলোচনায় নিজেদের জয়ই দেখছে। বিরোধীদের দাবি মেনেই সরকার সংসদে নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়েছে। সেখানেই একদিকে যেমন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, মণীশ তিওয়ারি, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবরা সরকারের তুলোধোনা করেছে। একইভাবে বাংলার এসআইআর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরাসরি বিজেপিকে বাংলা, বাঙালি বিদ্বেষী বলেই তোপ দাগলেন তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। 

    রাহুলের তোপ, ভোট চুরি করেই জিতছে বিজেপি। কেন মোদি সরকার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য কমিশনারের নিয়োগের কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিল? তাহলে কি প্রধান বিচারপতিকে বিশ্বাস করে না সরকার? রাহুলের প্রশ্ন, ইভিএমের মধ্যে কী আছে, তা কেন বিশেষজ্ঞদের দেখতে দেওয়া হয় না? কেন আড়াল? ইভিএমের মাধ্যমে ভোটচুরি করছে বিজেপি। মণীশ তিওয়ারির মন্তব্য, নির্বাচনী সংস্কার যদি প্রকৃতই কেউ করে থাকেন, তার নাম রাজীব গান্ধী। যিনি ভোটাদানের ন্যূনতম বয়স ২১ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ বছর করেছিলেন। আর এখন যে এসআইআর হচ্ছে, সেটি বেআইনি। বাংলা সহ আগামী বছর যেসব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আছে, সেখানে ইভিএম বাতিল করে পেপার ব্যালটে ভোটের দাবি করেন তিনি। যা সমর্থন করেন অখিলেশ যাদবও। 

    অন্যদিকে কল্যাণের তোপ, কমিশনকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদি কি ঠিক করবেন নাকি, কে হবে ভোটার? ২০২৪ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা কোনও ব্যক্তি যদি লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিতে থাকেন, তাহলে তার নাম কেন খুঁজতে হবে ২০০২ সালের তালিকায়? আসলে ভোটারদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ভোটার হতে গেলে অর্ডিনারি রেসিডেন্ট হলেই চলে। সিটিজেনশিপের প্রয়োজন নেই। তাই এসআইআর প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি করেন তিনি। 

    একইসঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়া চলতে থাকা বিজেপির ডাবল ইজ্ঞিন রাজ্যগুলির সমালোচনা করে কল্যাণ বলেন, বিএলওদের ওপর অমানবিক চাপ দেওয়া হচ্ছে। যার জেরে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে ১০, মধ্যপ্রদেশে ৯, গুজরাতে ছয়, রাজস্থানে তিনজন মারা গিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারী ধরার নামে যে এসআইআর হচ্ছে, বিহারে তার ফল কী? একজনও বাংলাদেশি, রোহিঙ্গাকে কি চিহ্নিত করতে পেরেছে কমিশন? পারেনি। তাহলে? 

    কল্যাণ বলেন, আসলে বাংলাকে টার্গেট করেছে। সেই কারণেই বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি আখ্যা দিচ্ছে। বিজেপি বাঙালি বিদ্বেষী। সেই কারণেই বঙ্কিমচন্দ্রকে বঙ্কিমদা বলে অপমান করেন। বিদ্যাসাগর, রামমোহন রায়কে অসম্মান করেন। প্রধানমন্ত্রী কখনও সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে কি প্যাটেলদা বলে ডেকেছেন? তির্যক তোপ দাগেন কল্যাণ। এই ইস্যুতে এদিন পুরনো সংসদ ভবনের ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল হলে বঙ্কিমচন্দ্র এবং রবীন্দ্রনাথের ছবি বুকে রেখে অভিনব আঙ্গিকে নীরব প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল। ৭৯ বছর আগে এদিনই সেন্ট্রাল হলে বসেছিল প্রথম সংবিধান সভা। 
  • Link to this news (বর্তমান)