• বিজেপি এলে ধ্বংস হবে রাজ্য: মমতা, এসআইআর সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি শাসনের ছক
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: এসআইআরকে সামনে রেখে বিজেপি বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের ছক কষছে বলে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তাঁর সাবধানবাণী—বিজেপি এলে ধ্বংস হবে রাজ্য। ধ্বংস হবে বাংলা-বাঙালির অস্তিত্ব, ভাষা, কৃষ্টি আর সংস্কৃতি। মঙ্গলবার কোচবিহার রাসমেলা ময়দানের জনসমুদ্রকে সম্বোধন করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন—এসআইআর চলছে। সবাই নাম তুলবেন। কারণ এটা ওদের (বিজেপি) চালাকি। সামনে নির্বাচন আছে। যাতে সবাই এসআইআর না করতে পারে, এই জন্যই নির্বাচনের দু’মাস আগে পরিকল্পনা করে এমনটা করেছে। এই পর্বেই মমতার বার্তা—এসআইআর করতে দিতে হবে। যদি আমরা অ্যালাও না করি, ওরা রাষ্ট্রপতি শাসন করে ভোট করবে। বিজেপির হাতে রাজ্য গেলে বাংলাটা ধ্বংস হয়ে যাবে। অস্তিত্ব থাকবে না। আপনার ভাষা থাকবে না। আপনার সম্ভ্রম থাকবে না। আপনার ঠিকানা থাকবে না।’ 

    ভরা রাসমেলা ময়দানে সেই সময় জনজোয়ার। কোচবিহারের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষের ভিড়। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ ঘোষণা, কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প এখানে হবে না। দিল্লি, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশে অত্যাচার করছেন। আপনারা বাংলা চালাবেন? পাঁচ বছর উজ্বলা যোজনার টাকা দিয়েছেন? চা বাগান খুলেছেন? এসব প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তাঁর পরামর্শ—হেয়ারিংয়ে ডাকলে যাবেন। সব কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকবেন। আমরা প্রতিটি গ্রামসভায় ‘মে আই হেল্প ইউ’ ডেস্ক করে দেব। কোনও অসুবিধা হবে না। 

    উন্নয়নের স্বার্থে রাজ্য সরকারের কাজ, কেন্দ্রের বঞ্চনা, বিএসএফের অত্যাচারের অভিযোগ তুলেও মঞ্চে সরব হন মমতা। তাঁর সোজাসাপটা কথা, কাজ করবে রাজ্য সরকার। টাকা দেবে রাজ্য সরকার। আর গুলি চালাবে কেন্দ্র সরকার? বর্ডারে গিয়ে অত্যাচার করবে। বিএসএফ অত্যাচার করতে এলে, মা-বোনেদের এগিয়ে দিন। আমি দেখতে চাই মা-বোনের শক্তি কতটা!  আমরা মাথানত করি না। টাকা নয়, মনের শান্তি সব থেকে বড় বিষয়। 

    তাঁর কথায়, সাড়ে চার কোটি সংখ্যালঘুকে স্কলারশিপ দিয়েছি। রাম ও বাম চাকরি খাওয়ার জন্য মামলা করছে বলে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তাঁর বক্তব্যের সময় এসআইআর প্রসঙ্গ বারবার উঠে আসে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের বলুন নাম তুলতে। হেয়ারিংয়ে ডাকলে অবশ্যই যাবেন। কাগজপত্র যা থাকবে নিয়ে যাবেন। আমাদের জিএসটি থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়েছে। আর গদিবাবুরা শুধু প্রচার করেই বেড়াচ্ছেন। কখনও নোটবন্দি, কখনও ভোটবন্দি। ওদের টার্গেট! এক কোটি নাম যেনতেন করে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার। রাজ্যের উন্নয়ন প্রসঙ্গে জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, এই ১৪ বছরে যা ডেভেলপমেন্ট করেছি, সারা পৃথিবীতে কোথাও হয়নি। একথা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি। মানুষের চাহিদা মেনে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গোটা বাংলায় কাজ চলছে। সিংহগর্জনে সায় দেয় সভাস্থল। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)