• দুয়ারে রেশনে সামগ্রীর বদলে বিলি হচ্ছে টাকা
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বালুরঘাট: দুয়ারে রেশনে সামগ্রীর বদলে বিলি হচ্ছে টাকা। রেশন তুলতে গেলে আঙুলের ছাপ নিয়েই গ্রাহকদের প্রশ্ন করা হচ্ছে টাকা না সামগ্রী নেবেন? উত্তরে টাকা বলতেই সঙ্গে সঙ্গে চালের দাম ধার্য করে দেওয়া হচ্ছে। দুয়ারে রেশনের দোকানের আশপাশেই ফড়েরা  ভিড় করছে। তারাও আবার সরাসরি সেই সামগ্রী কিনে নিচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শহর থেকে গ্রামগঞ্জে সর্বত্রই এই চিত্র চোখে পড়ছে। 

    এনিয়ে জেলাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সরকার চাল কিনে তা রেশন ডিলারের মাধ্যমে উপভোক্তাদের হাতে বিনামূল্যে দিচ্ছে। কিন্তু একাংশ রেশন ডিলার বেশি মুনাফা লাভের আশায় সেই চাল না দিয়ে সরাসরি টাকা দিচ্ছেন। এমন অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। 

    এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ামক শুভাশিস গোস্বামী বলেন, এমন অভিযোগ গুরুতর। বিষয়টি আমাদের সমস্ত অফিসারদের দেখতে বলা হয়েছে। যদি এই ধরনের কাজ কোথাও হয় তাহলে যে কোনওভাবে এটাকে আটকাতে হবে। দপ্তর কোনওভাবেই এটাকে প্রশ্রয় দেয় না। যদি কেউ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

    বালুরঘাট শহরের রঘুনাথ মন্দির এলাকার এক বাসিন্দা রিপন সূত্রধর বলেন, আমাদের এলাকায় এমনিতেই রেশন ডিলার মাসে একদিন আসে। সকালের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে দেরি করে আসে। এরপর কিছু সামগ্রী দিতে না দিতেই শেষ হয়ে যায়। ফলে একাংশ উপভোক্তা সামগ্রীর পরিবর্তে টাকা নিয়ে চলে যান। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, উপভোক্তাদের ঠিক করে পরিষেবা দেওয়া হয় না। সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পদক্ষেপ দরকার। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ৩০০’র বেশি রেশন ডিলার রয়েছে। সব জায়গাতেই দুয়ারে রেশন চালু হয়েছে। জেলার প্রায় ১৬ লক্ষের বেশি মানুষ দুয়ারে রেশন পরিষেবা পায়। নিম্নবিত্ত ও দ্ররিদ্র শ্রেণির মানুষকে চাল দেওয়া হয়। অনেক সময় গম দেওয়া হয়। তাই রেশন ডিলারদের একাংশ সরাসরি চাল ব্যবসায় যুক্ত হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। অনেক জায়গায় সরাসরি গ্রাহকদের বলা হয় চাল না টাকা নেবেন? 

    এদিকে প্রতি কেজি চালের দাম ধার্য করে নির্দিষ্ট টাকা দেওয়া হচ্ছে। অনেক গ্রাহক সেই টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। অনেক রেশন ডিলার আবার কম সামগ্রী এনে টাকা বিলি করছেন। জেলাজুড়ে এমন চিত্র নজরে এলেও প্রশাসনের কোনও টিমই অভিযান চালায় না। এমনকী রেশন এলেই সঙ্গে সঙ্গে ফড়েরা এসে পাশেই কেনার জন্য বসে পড়ছে। 

    সূত্রের খবর, ওই চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েই এই ব্যবসা চলছে। ফলে সেই চাল মজুত করে প্রচুর টাকা লাভ হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বাসিন্দারা এনিয়ে সরাসরি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)