• যুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হয়, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে বার্তা দলনেত্রীর
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: ‘ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে কাজ করতে হবে। মনে রাখবেন যখন যুদ্ধ হয় তখন সবাইকে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে হয়’। এসআইআর আবহে কোচবিহারে এসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দীর্ণ দলের জেলা নেতৃত্বকে এমনই বার্তা দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

    বেশকিছু দিন ধরেই কোচবিহারে তৃণমূল কার্যত দু’টি গোষ্ঠীতে বিভক্ত। দলের সুপ্রিমো কোচবিহারে আসার আগে জেলায় বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে, সেখানেও দুই গোষ্ঠীকে একসঙ্গে দেখা যায়নি। সোমবার দলনেত্রী জেলায় আসেন। মঙ্গলবার রাসমেলা ময়দানের জনসভার ঠিক আগে কিন্তু অন্যচিত্র দেখা যায়। 

    মমতা সভাস্থলে আসার আগে মঞ্চে তখন মাইক হাতে দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। আর মঞ্চের নীচে জেলা তৃণমূলের যুযুধান দুই নেতা উদয়ন গুহ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষরা গোল হয়ে বসে রয়েছেন। জেলার প্রায় সব শীর্ষ নেতাই সেখানে ছিলেন। এরপর নেত্রীর সভামঞ্চে সকলেই উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রসঙ্গ বলতে বলতে দলে ঐক্যের বার্তাও দেন। বলেন, সামনে বিধানসভা নির্বাচন। কোচবিহারে ৯-৯ আসন দখলের টার্গেট নিয়েছে দল। 

    রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পার্থপ্রতিম রায় এক ছাতার তলায় আসার পর থেকে অপর গোষ্ঠী জেলা সভাপতি, মন্ত্রী উদয়ন গুহ, সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, আব্দুল জলিল আহমেদ সহ অন্যান্য নেতারা কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন। একমঞ্চে কচিত কদাচিত দেখা গেলেও জেলায় দলের কোনও বৈঠকেই তাঁদের দেখা যায় না। ঠিক এই আবহেই জেলায় এসে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী এবার নির্দেশ দিয়ে গেলেন, যুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে। 

    সম্প্রতি কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পদত্যাগ ইস্যুতে দলের অন্দরে যথেষ্ট জলঘোলা হয়। কোচবিহার-২ এর ব্লক সভাপতির নাম ঘোষণা, অঞ্চলে অঞ্চলে কমিটি গঠন, ব্লকের সভাপতির নাম স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের মামলায় জড়িয়ে যাওয়া সহ একাধিক বিষয়ে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সামনে বিধানসভা ভোট। সেই নির্বাচনে যদি দল ভালো ফল করতে না পারে তাহলে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই কারণ হবে বলে এখন থেকেই প্রমাদগুণতে শুরু করেছে জেলা নেতৃত্ব। 

    ঠিক তখনই জেলায় এসে ঐক্যের বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রবিকে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে চা খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিককে। সেটাও কার্যত দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ারই বার্তা ছিল। 

    • মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন রবি ঘোষ। রয়েছেন অভিজিৎ দে ভৌমিক, জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াও। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)