• পঞ্চানন বর্মার মূর্তি ছুঁয়ে ‘বাংলাকে রক্ষা’র শপথ, টাকা দিয়ে ভোট কিনি না: মমতা
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: রাজবংশী সমাজের প্রাণপুরুষ ঠাকুর পঞ্চানন বর্মাকে আমার শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও প্রণাম জানাই। মঙ্গলবার রাসমেলা ময়দানের জনসভা মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চানন বর্মার আবক্ষ মূর্তি ছুঁয়ে বলেন, শপথ করে বলছি,  বাংলাকে রক্ষা করব। এটা আমাদের গর্ব যে তাঁর নামে আমরা পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় করতে পেরেছি। তাঁর জন্মস্থান খলিসামারির পূণ্যভূমিতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু হয়েছে। বাড়ি সংস্কার করে পঞ্চানন বর্মা সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে। 

    মঙ্গলবার কোচবিহারের রাসমেলা মাঠে জনসভায় এসে প্রথমেই মনীষী পঞ্চানন বর্মার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই বক্তব্য শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চের ডান দিকে এদিন ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মূর্তি বসানো হয়েছিল। মনীষী পঞ্চানন বর্মার নামে যে এই সরকার বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সে কথাও একবার জনসভায় উপস্থিত সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। 

    শুধু পঞ্চানন বর্মাই নন, কোচবিহারের মহারাজাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের নামকরণ হয়েছে বলেও জানান মমতা। এই সরকারের আমলেই মেডিক্যাল কলেজটি স্থাপিত হয়েছে। তিনি বলেন, মহারাজাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নতুন মেডিকেল কলেজের নাম রাখা হয়েছে মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ২৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার হেরিটেজ টাউন, ভাওয়াইয়া সেতু, কত রাস্তা, চ্যাংরাবান্ধা ডেভলপমেন্ট অথরিটি, এসবই আমরা করেছি। 

    রাজ্যে বর্তমান শাসকদল ১৪ বছরে কি কি কাজ করেছে তার একটা পাঁচালি তৈরি করা হচ্ছে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আমরা একটা উন্নয়ন পাঁচালী তৈরি করছি। 

    ১৫ বছর এখনও হয়নি। ক্ষমতায় আসার পর এক বছর বামফ্রন্ট সরকারের জঞ্জাল পরিষ্কার করতে সময় দিতে হয়েছে। মাত্র ১৩ বছর সময় হাতে পেয়েছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার রাজ্যজুড়ে প্রায় ২ কোটি ২১ লক্ষ মহিলা পাচ্ছেন। কন্যাশ্রী উপভোক্তার সংখ্যাটা এক কোটি। স্বাস্থ্যসাথী পৌনে নয় কোটি পরিবার পায়। তিনি আরও বলেন, ১ কোটি ৪৪ লক্ষেরও বেশি সাইকেল এখনও পর্যন্ত স্কুল পড়ুয়াদের দেওয়া হয়েছে। তরুণের স্বপ্ন ৫৬ লক্ষ পায়। 

    এরপরেই তিনি বলেন, আমি বিজেপির মতো ভোট কিনি না। টাকা দিয়ে ভোট কিনি না। ভালোবাসা দিয়ে কিনি। যা দেওয়ার আমরা আগেই দিই। ভোটের সময় নতুন করে উজালার এক মাসের নাটক, নতুন করে কিছু দেওয়ার নাম করে নাটক, এসব নাটক আমরা বরদাস্ত করি না। সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। 

    বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতার বক্তব্য, যতই চক্রান্ত কর এসআইআর সামনে আর পিছনে এনআরসি। কিছু হবে না। মানি না। ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না। মানুষ বিতাড়িত হবে না। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। হিন্দুরা যদি গলার মালা হয় আদিবাসী, বৌদ্ধ সকলেই গলার মালা। আমরা বিভেদ করি না। আমরা সকলে একসঙ্গে বাস করি। সকলকে সমান চোখে দেখি। 

    এরপরেই মঞ্চে রাখা মনীষী পঞ্চানন বর্মার মূর্তির সামনে গিয়ে তাঁর মূর্তি ছুঁয়ে তিনি বলেন, বাংলাকে রক্ষা করব। 

    মুখ্যমন্ত্রীর এ কথায় করতালিতে সভাস্থল মুখরিত হয়ে ওঠে। হাজার হাজার লোক সম্মিলিতভাবে বলে ওঠে বাংলাকে আমরা সকলে মিলে রক্ষা করব।
  • Link to this news (বর্তমান)