ভিনরাজ্যের অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্য রুখতে ঘুঁটি সাজাচ্ছে মালদহ পুলিশ
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ: ভিনরাজ্য থেকে আসা দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য রুখতে এবার বিশেষ তৎপর মালদহ জেলা পুলিশ। পাশাপাশি, ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে আঁতাত রাখা স্থানীয় দুষ্কৃতীদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
গত এক বছরে মালদহে ঘটে যাওয়া ছোট থেকে বড় মাপের বিভিন্ন অপরাধের ক্ষেত্রে ভিনরাজ্যের যোগসূত্র মিলেছে। খুন, মাদকের কারবারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিনরাজ্যের অপরাধ চক্রের যোগ বারবার সামনে এসেছে। তাই বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে মালদহে এসে অপরাধ করে অন্য রাজ্যে আশ্রয় নেওয়ার ছক বানচাল করতেই জেলা পুলিশ নতুন করে সক্রিয় হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
মালদহের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, আন্তঃরাজ্য অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করব। সীমানা সংলগ্ন এলাকাগুলিতে পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে এই ধরণের অপরাধ চক্রের ডানা ভেঙে দিতে আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। পুলিশের কাজের গোপনীয়তার জন্য এর বেশি কিছু এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। মালদহের সঙ্গে প্রতিবেশী দুই রাজ্যের সীমানা রয়েছে। বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে স্থল, রেলপথের পাশাপাশি জলপথেও যাতায়াতের রুট রয়েছে। ফলে ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকে অনেক অপরাধী মালদহে সহজেই ঢুকে পড়তে পারে। আবার জেলায় অপরাধ করে আন্তঃরাজ্য সীমানা পেরিয়ে বিহার কিংবা ঝাড়খণ্ডে গা ঢাকাও দেয় তারা।
জনপ্রিয় তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়ার পর অপরাধীদের উদ্দেশ্যই ছিল বিহারে পালিয়ে যাওয়া। এমনকি খুনের পাণ্ডাদের দু’একজন দীর্ঘদিন বিহারে লুকিয়েও ছিল।শুধু তাই নয়, ভোরবেলা কিংবা সন্ধ্যায় ছিনতাই করে বিহার বা ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে যাওয়ার একাধিক ঘটনাও এর আগে মালদহে ঘটেছে।
বিহারের কুখ্যাত ডাকাত লালু সাহানির গ্যাং এর আগে মালদহের চাঁচল মহকুমায় একাধিক সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত ছিল। পরে মালদহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে। পাশাপাশি, মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে সাম্প্রতিক সময়ে ধরা পড়েছে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের একাধিক বাসিন্দা। পুলিশের কড়াকড়িতে জেলায় মাদক উৎপাদন ধাক্কা খাওয়ায় জেলার অনেক মাদক উৎপাদক ঝাড়খণ্ডেও আশ্রয় নিয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। বিহার সংলগ্ন হরিশ্চন্দ্রপুর এবং চাঁচল থানা এলাকায় প্রতিবেশী রাজ্যের ডাকাত দলের হানা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার।
বিহারের মুঙ্গের থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র চোরাপথে মালদহে পাচার কিংবা খুব কম টাকায় বিক্রির ঘটনাতেও জেলা ও ভিনরাজ্যের একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।(জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, যাতায়াতের সুব্যবস্থার জন্যই বিহার ও ঝাড়খণ্ডের অনেক অপরাধী অনেক সময় মালদহে ঢুকে পড়ে। জেলায় তাদের সাহায্য করার অনেকে রয়েছে। এই আন্তঃরাজ্য অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে এবার সম্পূর্ণ নতুন ধারায় লাগাতার অভিযানের পরিকল্পনা করছি আমরা।