বিজেপি এমপির তদন্তের দাবি, ‘পর্যটক’ বলে কটাক্ষ তৃণমূল, বিজিপিএমের
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থ খরচ নিয়ে পাহাড় ও সমতলে বিতর্ক চরমে। পাহাড়ে চতুর্দশ ও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থ খরচ সংক্রান্ত কোনও তথ্য পোর্টালে না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি এমপি রাজু বিস্তা। একই সঙ্গে তিনি সমতলেও অর্থ কমিশনের বরাদ্দ খরচের হার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তদন্তের দাবি করেছেন। মঙ্গলবার এনিয়ে বিবৃতি জারি করেন এমপি। তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেস। উভয়পক্ষের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলির ইতিহাস না জেনেই পর্যটক এমপি গলা ফাটাচ্ছেন। ছাব্বিশের ভোটের আগে ফাটা ক্যাসেট বাজিয়ে হাওয়া গরমের ছক কষছেন।
রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো দার্জিলিং জেলা ১৪তম ও ১৫তম অর্থ কমিশনে কোটি কোটি টাকা পেয়েছে। সেই অর্থ খরচের পরিসংখ্যান রাজ্য সরকার ই-গ্রামস্বরাজ পোর্টালে সংরক্ষিত করেছে। তা দেখেই দার্জিলিংয়ের বিজেপি এমপি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
তিনি জানান, দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে ১৪তম ও ১৫তম অর্থ কমিশনের বরাদ্দ সংক্রান্ত কোনও তথ্য ওই পোর্টালে নেই। এতে তিনি অবাক হয়েছেন।
২০০১ সালের পর পাহাড়ে কোনও পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। দেড় দশকেরও বেশি সময় দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। বিজিপিএমের মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, পঞ্চায়েত ব্যবস্থা না থাকাতেই কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা মিলছিল না পাহাড়ে। সেই সময় বিস্তাদের হুঁশ হয়নি পাহাড়ের পঞ্চায়েতগুলি পুনরায় সচল করার। অনীত থাপার উদ্যোগে ২০২৩ সালে এখানে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা পুনরায় চালু করেছে রাজ্য সরকার। এরপর এখানে অর্থ কমিশনের টাকা ঢুকছে। কাজেই, ইতিহাস না জেনে ফাটা ক্যাসেট বাজাচ্ছেন বিস্তা। পাহাড়বাসী কিছু অর্থ কমিশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার জন্য দায়ী বিজেপিও।
এদিকে, জেলার সমতলভাগে অর্থ কমিশনের বরাদ্দ খরচের হিসেব নিয়েও সরব বিজেপি সাংসদ। তিনি জানান, ২০২১-’২২ থেকে ২০২৪-’২৫ অর্থবছর পর্যন্ত মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়ার জন্য ৫২০.২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে পোর্টালে মিলেছে। এরমধ্যে ব্যয় হয়েছে ১১৪.৪৮ কোটি টাকা। এরঅর্থ ৪০৫.৪৪ কোটি টাকা এখনও খরচ হয়নি। এটা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। এ ব্যাপারে ক্যাগকে দিয়ে হিসেব পরীক্ষা এবং তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরা অবশ্য বলেন, মহকুমায় সংশ্লিষ্ট দু’টি অর্থ কমিশনের টাকা নিয়ম মতো খরচ হয়েছে। এনিয়ে কোনও অসংগতি নেই। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ কিশোরীমোহন সিংহ বলেন, ওই এমপি ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। এখানে পর্যটকের মতো থাকেন। সবটা না জেনে ভোটের মুখে বসন্তের কোকিলের মতো ‘কুহু’ ‘কুহু’ করছেন। এতে বিজেপির কোনও লাভ হবে না। এবার ওদের বিসর্জন হবে।