বাংলা দখলে বিজেপির আশার ‘গুড়ে বালি’ দেখছেন অনুব্রত
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: এসআইআর প্রক্রিয়াকে কেন্দ্রের ‘ভয়ঙ্কর চিত্রনাট্য’ বলে উল্লেখ করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডল। সেই সঙ্গে বিজেপির নাম না নিয়ে সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘এসআইআর করে দু’কোটি মানুষকে ঘিরে রেখে বাংলা দখল করবে ভাবছো। সে গুড়ে বালি। জীবনেও হবে না। মনে রেখো, পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
মঙ্গলবার বিকেলে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকে এসআইআর সংক্রান্ত সভায় বক্তব্য রাখছিলেন অনুব্রত। সেখানে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরব হনি তিনি। এসআইআরকে ‘ভয়ঙ্কর চিত্রনাট্য’ অ্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমনিতে দমন করা যাচ্ছে না। উন্নয়ন ও রাজনৈতিক লড়াইয়ে পেরে উঠছে না। তা হলে তাঁকে কী করে উচ্ছেদ করা যাবে? অতএব, এসআইআর নিয়ে এসো। এনআরসি করো। বাংলার দু’কোটি মানুষকে ঘিরে ফেলো। তারপর আমরা বাংলা দখল করব।’
জেলায় এসআইআর প্রক্রিয়ায় যাতে একজন বৈধ ভোটারেও নাম বাদ না পড়ে, তা পর্যবেক্ষেণে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বুথ পিছু বিএলএ-২ নিয়োগ করা হয়েছে। বাকি আর মাত্র দু’দিন। সকল বৈধ ভোটারের নাম উঠেছে কি না, তা দলের বিএলএ-২ ও সুপারভাইজারদের কাছে খুঁটিনাটি জেনে নেন অনুব্রত। পাশাপাশি, মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটারের সংখ্যাও ‘দিদির দূত’ অ্যাপের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে নেন। প্রতিটি বুথেই ফর্ম ফিলাপ থেকে রিসিভ কপি নেওয়া শেষ হয়েছে বলে জানিয়ে দেন বিএলএ-২’রা। জীবনে অনেক ধাক্কা সামলে অনুব্রত জেলা রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর উপরই অগাধ ভরসা রেখেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই ভরসার জায়গা ধরে রাখতে চেষ্টার কসুর করছেন না তিনি। এদিন, এসআইআর সংক্রান্ত সভায় সেটাই বুঝিয়ে দিলেন অনুব্রত। একেবারে পুরনো ফর্মে ফিরেই গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেছেন তিনি। বলেন, ‘তোমরা জীবনেও বাংলা দখল করতে পারবে না। তোমরা ভেবেছিলে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় অনেকের নাম থাকবে না। সেগুলি বাদ দিয়ে দেব। এখানে কেউ বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা রয়েছে? একজনও বিএলও কি বলতে পারবেন? তুমি কী করে বাদ দেবে। পারবে না। আমাদের এই মাটিতে জন্ম। এই মাটিতেই মৃত্যু হবে। তাই তোমরা যতই এসআইআর করো, আমরা ভয় পাই না।’
এসআইআর ইস্যুতে অনুব্রতর বক্তব্যে উঠে আসে এনআরসি’র প্রসঙ্গও। সেক্ষেত্রেও অসমের উদাহরণ টেনে এনে বিজেপিকে খোঁচা দিতে দিতে ছাড়েননি তিনি। কেষ্ট বলেন, ‘অসমের মতো ১৯ লক্ষ হিন্দু ও ৫ লক্ষ মুসলিমকে তোমরা জেলে ঢোকাবে ভেবেছো। পশ্চিমবঙ্গেও এটা করতে পারলে রাজ্য দখল করা যাবে। তোমরা মুর্খের স্বর্গে বাস করছো। ছাব্বিশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৩০ থেকে ২৩৫টি আসন নিয়ে আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। কারণ, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ৯৬টি সরকারি প্রকল্প নিয়ে বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী।’
অনুব্রতকে পাল্টা দিয়েছেন বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। এদিন তিনি বলেন, ‘বিজেপি বাংলা দখল করতে পারবে কি পারবে না, সেটা উনি আগে থেকে বলতে পারেন না। উনি জ্যোতিষী হয়ে যাননি।’ এদিকে এদিন রামপুরহাট মেডিকেলে সোনালি বিবিকে দেখতে আসেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। তিনি ফল ও তাঁর সোসাইটির পক্ষ থেকে দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন সোনালির হাতে।