মদ খেয়ে ক্লাসে শিক্ষক, শোকজ করে আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি করিমপুরে
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, করিমপুর: শিক্ষক মদ্যপ অবস্থায় ক্লাসে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ করিমপুর জগন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছেন স্কুলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক। জানা গিয়েছে, সোমবার স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বার্ষিক পরীক্ষার খাতা দেখাতে অষ্টম শ্রেণির কক্ষে যান ভূগোল শিক্ষক প্রবীরকুমার মণ্ডল। ক্লাসের সকল ছাত্রের খাতা দেখা তাঁর সম্পূর্ণ হয়নি। ক্লাসে গিয়েও পরীক্ষার খাতা দেখছিলেন। ছাত্রদের হাতে খাতা দিয়ে তিনি নিজের মতো নম্বর বসিয়ে নেওয়ার কথা বলেন বলে অভিযোগ। এমন অবস্থা দেখে ক্লাসের কয়েকজন পড়ুয়া বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকদের জানায়। এরপর অভিভাবকদের অনেকেই স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানান। খবর যায় করিমপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক তথা ওই স্কুলের প্রশাসকের কাছে। তিনি অভিযোগ পেয়েই তদন্ত করতে স্কুলে যান। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সোমদেব মজুমদার বলেন, মদ্য পান করে স্কুলে যাওয়ার কথা প্রথমে ওই শিক্ষক অস্বীকার করেন। পরে তাঁকে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরীক্ষা করে মদ্যপানের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজের। তাঁর জবাব পাওয়ার পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধান শিক্ষক রজতকুমার সরকার জানান, এদিন বার্ষিক পরীক্ষার ভূগোলের খাতা দেখাতে অষ্টম শ্রেণির ক্লাসে যান প্রবীর মণ্ডল। উনি অনেকের খাতা দেন এবং বেশ কিছু খাতা দেখা সম্পূর্ণ না হওয়ায় ক্লাসেই দেখছিলেন। সেই সময়ে অনেক ছাত্র তাঁকে ঘিরে ছিল এবং কেউ কেউ নিজের ইচ্ছে মতো খাতায় নম্বর লিখে দেয়। কয়েকজন ছাত্র আমাকে এসে জানায়। এরপরে অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে ব্লক এআই বদরুজ্জামান সাহেব ও স্কুলের প্রশাসক সোমদেব মজুমদার স্কুলে আসেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা করে তার শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতির প্রমাণ মেলে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য মধ্য শিক্ষা দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিভাবকদের অনেকের অভিযোগ, এই স্কুলে পড়াশোনা করে এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী এখন প্রতিষ্ঠিত। এই বছর এই স্কুলের পঁচাত্তর বছর পূর্তি অনুষ্ঠান চলছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তার সমাপ্তি হবে। ঠিক তার আগে এমন ঘটনায় সকলের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। তাঁরা আরও জানান, এর আগেও বাচ্চারা এমন অভিযোগ জানিয়েছে। স্কুলের একাধিক শিক্ষকের খারাপ অভ্যাস রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত। অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। -নিজস্ব চিত্র