• চন্দননগরে ভরসন্ধ্যায় প্রৌঢ়ার বাড়িতে লুট, আতঙ্কে বাসিন্দারা
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: এক প্রৌঢ়ার বাড়িতে হানা দিয়ে সোনার গয়না লুট করে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। চন্দননগরের মানকুণ্ডু আশ্রমপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা প্রাক্তন শিক্ষিকা ওই প্রৌঢ়াকে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করেছিল। তখন ওই প্রাক্তন শিক্ষিকা তাদের বলেন, মুখ ঢাকা তিনি আগন্তুকদের কাউকেই চিনতে পারেননি। তাই সাক্ষ্য দিতে পারবেন না। এরপর তাঁকে ছেড়ে দিয়ে গয়না নিয়ে চম্পট দেয় তারা। সোমবার সন্ধ্যায় মানকুণ্ডুর এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। যদিও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কোনও কিনারা হয়নি। রাতেই অসুস্থ প্রৌঢ়াকে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

    এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাগরিকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। প্রৌঢ়ার নাম বনানী বিশ্বাস। বছর পঁচাত্তরের এই মহিলা বাড়িতে একাই থাকেন। ফলে এই ঘটনায় বৃদ্ধ দম্পতিদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পুলিশের একাংশেরও দাবি, বনানীদেবী কার্যত একা থাকেন। এই সুযোগটাই নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সোনার গয়না ছাড়া দুষ্কৃতীরা আর কিছুই নেয়নি। চন্দননগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বনানীদেবী বলেন, ‘ওরা দু’জন ছিল। সন্ধ্যার পর আচমকা বাড়িতে ঢুকে পড়ে ওরা। ওদের মুখ ঢাকা ছিল। প্রথমে আমার মুখে আঘাত করে। তারপর গলা চেপে ধরে। আমি বললাম যে, আমি তো তোমাদের চিনতে পারিনি। তাহলে পুলিশকে জানাব কী করে। তোমরা যা নেবে নিয়ে যাও। আমাকে মেরো না। তারপর ওরা গয়না নিয়ে চলে যায়।’ ঘটনার সময় বনানীদেবীর পরিচারিকা সুলেখা গায়েন পাশের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বনানীদেবীর বোন জলি চট্টোপাধ্যায় থাকেন ওই পাড়াতেই। সুলেখা বলেন, মামির (বনানীদেবী) কাছে তাঁর বোনের আসার কথা ছিল। আমি পাশের বাড়ি যাওয়ার সময় তাই সদর দরজা খুলে রেখেছিলাম। ভাবতে পারছি না, এমন ঘটনা ঘটবে। শিক্ষিকার প্রতিবেশী মেরি রায় বলেন, আমি এসে দেখি ওঁনার মুখ সেলোটেপ দিয়ে বাঁধা। ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে। পরে সব জানতে পারলাম। ভয়ানক আতঙ্ক হচ্ছে। এমন ভয়াবহ ঘটনা আমাদের পাড়ায় আগে ঘটেনি।স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে বনানীদেবীর স্বামী মারা যান। তারপর থেকেই রিষড়া বিদ্যাপীঠ স্কুলের এই প্রাক্তন শিক্ষিকা একাই এই বাড়িতে থাকতেন। কিছুদিন ধরে পরিচারিকা সুলেখা তাঁর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। তিনি এই বাড়ি ছাড়াও আরও কয়েকটি বাড়িতে কাজ করেন। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি যখন কাজে গিয়েছিলেন, তখনই বনানীদেবীর উপর হামলা হয়। গয়না খোয়া গেলেও নিজের বুদ্ধিমত্তায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। 
  • Link to this news (বর্তমান)