নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: শুধু অফিসার পদমর্যাদার আধিকারিকরাই নন, এবার থেকে ডিউটির সময় বডি ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে হোমগার্ড প্রত্যেককেই। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা কী রকম, রাস্তায় সাধারণ মানুষের নানাবিধ অভিযোগ সবই ফুটে উঠবে ক্যামেরার ফুটেজে। সেসব খতিয়ে দেখবে হাওড়া সিটি পুলিশ। হাওড়া ট্রাফিক গার্ড এলাকায় এ সংক্রান্ত পাইলট প্রজেক্ট শুরু হলো সোমবার।
ডিউটির সময় ট্রাফিক পুলিশকে বডি ক্যামেরা ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। হাওড়া সিটি পুলিশের আটটি ট্রাফিক গার্ডেই এই নিয়ম মানা হয়। তবে এতদিন শুধুমাত্র এসআই, এএসআই, আইসি পদমর্যাদার আধিকারিকরাই বডি ক্যামেরা ব্যবহার করতেন। ডিউটি চলাকালীন প্রত্যেক মুহূর্তে ক্যামেরা অন রাখা আবশ্যিক ছিল না। ট্রাফিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে তাই এবার থেকে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টাই বডি ক্যামেরা অন রাখার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে।
তবে শুধুমাত্র আধিকারিকরা নন, অস্থায়ী হোমগার্ড, সিভিক ভলান্টিয়ার, কনস্টেবল প্রত্যেককেই বডি ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে। ডিউটি শুরু হওয়ার আগে ক্যামেরাটি ইউনিফর্মের সামনের অংশে লাগিয়ে সেটিকে অন করে দিতে হবে। ডিউটি শেষ হলে ক্যামেরা অফ করে জমা দিয়ে যেতে হবে। জমা দেওয়ার সময় খাতায় রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দেখা হবে ট্রাফিকে কর্মরত সেই ব্যক্তি দিনভর তাঁর দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করেছেন কি না। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ মৌখিকভাবে কোনও অভিযোগ জানালে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। হাওড়া ট্রাফিক কার্ড এলাকায় এদিন থেকে শুরু হয়েছে এই পাইলট প্রজেক্ট। ধাপে ধাপে দাসনগর, গোলাবাড়ি, বালি, ধূলাগড়, কোনা, হাওড়া ব্রিজ, দ্বিতীয় হুগলি সেতু ট্রাফিক গার্ডেও চালু হবে এই নিয়ম। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তার কথায়, এতদিন বডি ক্যামেরা ব্যবহার করার নিয়ম না থাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হতো।
বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, ট্রাফিক সামলানোর সময় কোনও বড় সমস্যা হলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপর জনরোষ গিয়ে পড়ে। ঘটনার রেকর্ড না থাকায় আইনশৃঙ্খলাতেও সমস্যা হয়। বডি ক্যামেরা ব্যবহার করার ফলে তাঁরাও অনেকটাই কনফিডেন্স পাবেন। বর্তমানে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে হাওড়া ট্রাফিক গার্ডে মোট ১২৫টি বডি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৩০টি ক্যামেরা স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হচ্ছে। ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে রাখার জন্য পর্যাপ্ত স্টোরেজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, শিবপুর থানার একটি বড় অংশ ও গোটা হাওড়া থানা এলাকা হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের অধীনে পড়ে। ফাঁসিতলা মোড়, মল্লিক ফটক, বঙ্গবাসী মোড়, কাজিপাড়া মোড়ের মতো শহরের গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক জংশনগুলি বাদে জি টি রোড, নেতাজি সুভাষ রোডের যানজট দিনভর সামলাতে হয় এই ট্রাফিক গার্ডকে। নিজস্ব চিত্র