অনিয়মের অভিযোগে ইআরও-এইআরও, ২ বিএলওকে শো’কজ নির্বাচন কমিশনের
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নিয়মভঙ্গের অভিযোগে বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার ৯৪ নম্বর বুথের দুই বিএলও, ইআরও এবং এইআরওকে শো’কজ করল নির্বাচন কমিশন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের জবাব তলব করা হয়েছে বলে খবর।
কমিশনের নজরে আসে, এসআইআরের প্রথম পর্যায়ে এই বুথে দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন আধিকারিক সরাসরি কমিশনের নির্দেশ অমান্য করেছেন এবং দায়িত্ব বহির্ভূত ও অসদাচরণমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অভিযোগগুলি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল এবং বিশেষ রোল পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্তের কাছেও পৌঁছেছিল। সে কারণে রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হয়।
কমিশনের এক আধিকারিক জানান, বারুইপুর পূর্বের ৯৪ নম্বর বুথে সব থেকে বড় অনিয়মের খবর মিলেছে। শাসকদলের বুথ সভাপতি এক শিক্ষিকাকে প্রথমে বিএলও করা হয়েছিল। বিরোধী দল অভিযোগ তুললে পরে তাঁকে বদল করা হয়। ৪ নভেম্বর ওই বুথে দায়িত্ব দেওয়া হয় এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নজরে আসে, ৪ নভেম্বর বদলি হওয়ার পরও আগের শিক্ষিকা একাধিক ইনিউমারেশন ফর্ম সংগ্রহ করেছেন এবং অনেক ফর্মে তিনি স্বাক্ষরও করেছেন। এরপর ওই বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইআরও-র কাছে জানতে চাওয়া হয়, কমিশনের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে বরখাস্ত হওয়া বিএলও কাজ চালিয়ে গেলেন? সূত্রের খবর, ইআরও জানান, নতুন বিএলও জানিয়েছিলেন তিনি অসুস্থ। তাই তাঁর আত্মীয়, যিনি পাশের ৯৬ নম্বর বুথের বিএলও, তিনি তাঁকে ডিজিটাইজেশনে সহায়তা করেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয়। এরপরই মোট চারজনকে শো-কজ করা হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, উত্তর সন্তোষজনক না হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি, কর্তব্যে অবহেলা ও অনিয়ম প্রমাণিত হলে এফআইআরও দায়ের করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে, আজ, বুধবার দুপুরে এসআইআরের কাজ খতিয়ে দেখতে বিশেষ রোল পর্যবেক্ষক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে কমিশন। পাশাপাশি এদিন এসআইআর নিয়ে কলকাতার বড়তলা থানা এলাকায় একটি বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করেছিল কমিশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিইও মনোজ আগরওয়াল। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ওই শিবিরে মোট ৮০৩ জন যৌনকর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। সেখানে ২১০ জন নতুন ভোটার হিসেবে নাম তোলার জন্য ৬ নম্বর ফর্ম সংগ্রহ করেন। ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য ৫১ জন ৮ নম্বর ফর্ম নেন। পাশাপাশি ১২ জন ইনিউমারেশন ফর্ম জমা দিয়েছেন।
এই বিশেষ শিবিরের পর এবার কলকাতার আরও দুই নিষিদ্ধপল্লি খিদিরপুর ও কালীঘাটে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হবে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল বলেন, কলকাতা দক্ষিণের জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে ওই শিবির আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।