ধর্ষণ মামলায় মেলেনি প্রমাণ, চার বছর পর বেকসুর খালাস
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ধর্ষণের মতো গুরুতর মামলায় প্রায় চার বছর হাজতবাসের পর অভিযোগের প্রমাণ না মেলায় বেকসুর খালাস পেলেন এক যুবক। মঙ্গলবার কলকাতার বিচারভবনের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট) কৌস্তভ মুখোপাধ্যায় এই আদেশ দিয়েছেন। আদালতের মন্তব্য, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষের আনা অভিযোগ কোনওভাবেই প্রমাণিত হয়নি। তাই তাঁকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হলো। আদালত সূত্রের খবর, এই মামলার শুনানি চলাকালে সওয়ালে উঠে আসে, পারিবারিক বিবাদকে ঘিরে যুবককে ধর্ষণের মতো মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ‘মুক্তিপ্রাপ্ত’ যুবকের দুই কৌঁসুলি মহম্মদ আবু সেলিম ও রিজওয়ানুর হোদা বলেন, ‘আমাদের মক্কেলকে যে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, আদালতের রায়েই তা প্রমাণিত হয়ে গেল। ন্যায় বিচার পেয়ে ভালো লাগছে।’ মুক্তিপ্রাপ্ত যুবক বলেন, ‘এমন ঘটনা যেন আর কারও জীবনে না ঘটে। যে সামাজিক সম্মান আমার নষ্ট হয়েছে, কোনও কিছুর বিনিময়ে কি তা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব?’
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে অভিযোগকারিণী যুবতী জোড়াসাঁকো থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, মাদক মিশ্রিত খাবার খাইয়ে দিদির দেওর তাঁকে পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পুলিশ তদন্তে নেমে পাকড়াও করে যুবককে। সেই মামলায় তদন্ত শেষ করে ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়। আদালতে সাক্ষ্য দেন দশজন। যুবতী বিচারকের কাছে ‘গোপন জবানবন্দি’ পেশ করেন। দীর্ঘ শুনানির শেষে এদিন আদালত এই ধর্ষণের মামলা থেকে রেহাই দেয় জেল হেপাজতে থাকা যুবকটিকে। রায় শুনে এজলাসে হাতজোড় করে বিচারকের দিকে তাকিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বছর ৩৫‑এর ওই যুবক।
আদালত সূত্রের খবর, এই মামলায় যুবতীর মেডিকেলে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। সাক্ষীদের বয়ানে ছিল একাধিক অসঙ্গতি। ঘটনার স্থান, তারিখ নিয়ে চলে বিভ্রান্তি। এনিয়ে নানা সাক্ষী নানা মত প্রকাশ করেন। সব মিলিয়ে এই মামলাকে ঘিরে ছিল নানা সন্দেহ ও বিভ্রান্তি। যা কোর্টের নজরে আসে। যা নিয়ে সরকার পক্ষ থেকে এর সদার্থক কোনও উত্তর কোর্টের কাছে পেশ করতে পারেনি। আর সে কারণেই জেল হেপাজতে থাকা অভিযুক্ত যুবককে মামলা থেকে এদিন ‘মুক্তি’ দেওয়া হয় বলে আদালত সূত্রের খবর