৬৪৬ দিন কেটে গেলেও প্রকাশিত হয়নি কোনও ‘শ্বেতপত্র’। ২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পরেই লোকসভায় বাংলার বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় ১০০ দিনের কাজ (MGNREGA) এবং আবাস যোজনায় টাকা দেওয়া নিয়ে বিজেপির দাবি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিজেপির কাছে এই ইস্যুতে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছিলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার পরে দীর্ঘ সময় কাটলেও বিজেপি সরকারের তরফে কোনও জবাবই মেলেনি।
বুধবার সংসদ চত্বরে সেই শ্বেতপত্রের দাবি পুনরায় মোদী সরকারকে মনে করালেন তৃণমূল সাংসদেরা। ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার বকেয়া টাকার সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলে ধরে সংসদ চত্বরে ধর্নায় সামিল হলেন দোলা সেন থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদার, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে জুন মালিয়া-সহ অন্য তৃণমূল সাংসদরা।
প্রসঙ্গত, অভিষেক দীর্ঘদিন বলে আসছেন, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপি বাংলায় হারার পর থেকেই ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ভোটে জিততে না পেরে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার পরিকল্পনাতে বিজেপির এই প্রচেষ্টা বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ বলেছিলেন, ‘২০২১ সালে ভোটে হারের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার যদি এক পয়সাও ১০০ দিনের কাজে বাংলাকে দিয়ে থাকে, তা হলে তা শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করা হোক। বিজেপির লোক জন মিথ্যা বলতে পারেন, কিন্তু কাগজ কখনও মিথ্যা বলে না।’
তবে ১০০ দিনের কাজে রাজ্যের বকেয়া নিয়ে বিজেপির দাবি, টাকা নিয়ে নয়ছয় করেছে তৃণমূল। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে ওই টাকা অন্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সেই কারণেই টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সেই মামলায় গত ৭ নভেম্বর রাজ্যের সমস্ত বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রের কাছে হলফনামা চায় সুপ্রিম কোর্ট এবং বাংলায় দ্রুত ১০০ দিনের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেয়। MGNREGA প্রসঙ্গ সম্পর্কে মঙ্গলবারই কোচবিহারের সভা থেকে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া নিয়ে নতুন শর্ত চাপানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেই সংক্রান্ত কাগজ ছিঁড়ে তিনি বলেন, ‘তিন, চারদিন আগে আমাদের একটা নোটিস পাঠিয়েছে...কেন্দ্রের নতুন লেবার কোড নিয়ে। ১০০ দিনের কাজের টাকা দিতে নতুন শর্ত চাপিয়েছে। আমরা এসব শর্ত মানি না, মানব না।'
তার পরে এদিন সংসদ চত্বরেও রাজ্যের বকেয়া নিয়ে সরব তৃণমূল সাংসদেরা।