এই সময়, আরামবাগ ও চুঁচুড়া: রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক বঙ্কিম বিশ্বাস বিজেপিতে যোগ দিতেই দলের অন্দরেই কোন্দল শুরু হয়ে গেল। ওই পুলিশ কর্তাকে বিজেপিতে আনার জন্য সমাজমাধ্যমে পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দলের নিচুতলার কর্মীরা। তাতে বঙ্কিম বিশ্বাসকে তৃণমূলের দালাল বলেও অভিহিত করেছেন তাঁরা। এরই মধ্যে চুঁচুড়ায় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হলো হুগলি সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীরা।
সব মিলিয়ে বিধানসভা ভোটের মুখে প্রাক্তন পুলিশ কর্তার বিজেপিতে যোগদান ঘিরে অস্বস্তি বেড়েছে গেরুয়া শিবিরে। রাজ্য নেতৃত্বের হাত ধরে সোমবার বিকেলে বিজেপিতে যোগদান করেন বঙ্কিম বিশ্বাস। চুঁচুড়া খাদিনা মোড়ের বাসিন্দা বঙ্কিম হরিপাল ও তারকেশ্বর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ছিলেন। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের সময় গোঘাট থানায় অফিসার ইনচার্জ ছিলেন। গুড়াপ, হরিপাল, জাঙ্গিপাড়া, কলকাতার দমদম, ভাটপাড়া-সহ একাধিক থানায় ওসি এবং আইসি পদে কাজ করেছেন। হাওড়ার ব্যাঁটরা থানার আইসি থাকাকালীন স্বেচ্ছাবসর নেন তিনি।
বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই সমাজমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, ওসি থাকাকালীন, বঙ্কিম বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় জেল খাটিয়েছেন। সমাজমাধ্যমে পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ ও বঙ্কিম বিশ্বাসের ছবি পোস্ট করে একজন মন্তব্য করেছেন, 'যে নেতার কাছে অর্থই সব, তার কাছে বঙ্কিম বিশ্বাস সম্পদ'। গুড়াপে বঙ্কিম ওসি থাকাকালীন বিজেপি কর্মীরা অত্যাচারিত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর নিজের বাড়িই ভাঙচুর হয়েছিল।
মিথ্যে মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্রের কথামতো সেই সময়কার ওসি বঙ্কিম বিশ্বাস বিজেপি কর্মীদের উপরে নানা অত্যাচার করেছিলেন। সোমবার বিকেলে বিজেপির রাজ্য সদর দপ্তরে শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে নেন বঙ্কিম বিশ্বাস। তারপর থেকেই তাঁকে নিয়ে বিজেপির অন্দরে কাজিয়া শুরু হয়েছে।
যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই বঙ্কিম বিশ্বাস বলেন, 'আমি গর্বিত বিজেপি দলে স্থান পাওয়ায়। দলের নীতি, আদর্শ ও মোদীজির আদর্শে দলের হয়ে কাজ করব। অন্যায়ের প্রতিবাদ করব।' বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, 'প্রাক্তন পুলিশ অফিসার বঙ্কিম বিশ্বাস একাধিক থানার দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি মোদীজির উন্নয়নের কাণ্ডারী হতে চান। তাই, চাকরি জীবন থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে বিজেপিতে এলেন। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।'