• শাহজাহানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার সময়ে সাক্ষীর গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা, মৃত ২
    এই সময় | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার সময়ে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হলো অন্যতম সাক্ষী ভোলা ঘোষের ছেলে ও গাড়ি চালকের। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন সাক্ষী ভোলাও।  বুধবার সকালে গাড়িতে চেপে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে বসিরহাট মহকুমা আদালতের দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। বয়ারমারিতে একটি পেট্রল পাম্পের কাছে তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। নয়ানজুলিতে উল্টে যায় তাঁদের গাড়ি। গুরুতর জখম হন ভোলা, গাড়ির সামনের আসনে বসা ভোলার ছেলে সত্যজিৎ ঘোষ এবং চালক শাহনুর মোল্লা। স্থানীয়রাই তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় ভোলাকে ভর্তি করা হয় মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে। 

    সূত্রের খবর, মাছের ব্যবসার জন্য ভোলা ঘোষ ২০ লক্ষ টাকা পেতেন শেখ শাহজাহানের কাছে। ২০২২ সালে শেখ শাহজাহান ভোলা ঘোষকে কুড়ি লক্ষ টাকার চেক দিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাউন্স হয়ে যায়। এর পরেই বসিরহাট মহকুমা আদালতে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে চেক বাউন্সের মামলা করেন। পাল্টা শেখ শাহজাহানও ভোলার বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

    বুধবার সেই মামলাতেই বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল ভোলা ঘোষ এবং তাঁর ছেলে সত্যজিৎ ঘোষের। এ দিন চালক শাহানুর মোল্লাকে সঙ্গে নিয়ে বসিরহাট মহকুমা আদালতের দিকে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। গাড়ির সামনের আসনে বসেছিলেন সত্যজিৎ এবং পিছনে ছিলেন ভোলা। বাসন্তী হাইওয়ের বয়ারমারি এলাকায় মালঞ্চ থেকে ধামাখালির দিকে যাওয়া একটি ট্রাক তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা দেয়। গাড়িটি গড়িয়ে নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সত্যজিৎ ঘোষ ও শাহনুর মোল্লার। ভোলাকে প্রথমে  মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।  সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। জানা গিয়েছে, তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কলকাতায়। তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক। 

    দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ন্যাজাট থানার পুলিশ। ট্রাকের চালক পলাতক বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল? তা কি আদৌ নিছক দুর্ঘটনা? তা নিয়ে নানা মহলে উঠছে প্রশ্ন। পুলিশ জানাচ্ছে, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হবে।

    উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারি মাসে রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেই সময়ে ইডি আধিকারিকদের মারধরের অভিযোগ ওঠে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় শাহজাহানের ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছিল। এর পরে শাহজাহানের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে পথে নামেন সন্দেশখালির বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে নারী নির্যাতনের অভিযোগও।  এর পরে রাজ্য পুলিশের হাতেই গ্রেপ্তার তিনি।

  • Link to this news (এই সময়)