• জাল ওষুধ রুখতে জোর নজরদারি আন্তঃরাজ্য সীমানায়
    এই সময় | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: হাওড়ার আমতার একটি গুদাম থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ভেজাল ওষুধ, গ্রেপ্তার হন গুদাম মালিক। এ বছর ফেব্রুয়ারির ঘটনা। তার পরে এপ্রিলে মুচিপাড়া থানা এলাকায় কয়েকটি পাইকারি ও খুচরো ওষুধের দোকানে হানা দিয়ে ড্রাগ ইনস্পেক্টররা বিপুল পরিমাণে মৃগীর নিম্নমানের ওষুধ–সহ বিভিন্ন ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেন। আবার, মে মাসে রাজ্য ড্রাগ ল্যাবে ১৩৭টি ওষুধের ব্যাচের নমুনা এনএসকিউ (নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি) বলে চিহ্নিত হয়। নমুনাগুলো মিলেছিল কলকাতা ও শহরতলি থেকে। নভেম্বরে গোয়েন্দা বিভাগের অফিসাররা ও ড্রাগ ইনস্পেক্টররা দেশ জুড়ে চলা কাফ সিরাপ–চক্রের সঙ্গে কলকাতার যোগ খুঁজে পান। কলকাতার আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক জনকে ওই চক্রে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তারও করা হয়।

    জাল ও ভেজাল ওষুধ ধরা পড়ার ঘটনা এ বছর প্রায়শই উঠে এসেছে সংবাদ শিরোনামে। রাজ্যে জাল ও ভেজাল ওষুধের রমরমা শোরগোল ফেলে দিয়েছে স্বাস্থ্য মহলে। বাংলা জাল ওষুধের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে বলে দাবি তুলে বিরোধীরাও সরব। বিভিন্ন জেলায় পর পর সন্দেহজনক ব্যাচের ওষুধ ধরা পড়ছে। স্বাস্থ্য দপ্তর জানাচ্ছে, নজরদারি বাড়ানোর ফলেই এত বিপুল পরিমাণ জাল ওষুধের হদিশ মিলছে নিয়ম করে। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের দাবি, ‘আজকাল অভিযান বেশি হচ্ছে বলেই বেশি করে ধরা পড়ছে জাল ওষুধ। এটা আমাদের নজরদারি বাড়ানোর ফল।’ স্বাস্থ্যসচিবের সংযোজন, ‘ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় জাল ওষুধ যাতে ঢুকতে না–পারে, তার জন্য আন্তঃরাজ্য সীমানাগুলোয় বিশেষ নজরদারি চলছে। তবে সাধারণ মানুষের সহযোগিতাও জরুরি।’

    ড্রাগ ইনস্পেক্টররা জানাচ্ছেন, ভিন রাজ্যের বেশ কয়েকটি চক্র একলপ্তে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ বাংলায় ঢোকানোর চেষ্টা করছিল। আন্তঃরাজ্য সীমানায় নজরদারি বাড়ানো ইস্তকই একের পর এক চালান ধরা পড়ছে বলে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল সূত্রের দাবি। স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, ওষুধ পরখ করার জন্য নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা এবং ল্যাবের পরিকাঠামো ক্রমেই বাড়ানো হচ্ছে। জাল ওষুধ শনাক্ত হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে করা হচ্ছে কড়া পদক্ষেপ। আন্তঃরাজ্য সীমানা ও রাস্তায় বিশেষ নজরদারির জন্য সেল তৈরি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।

    ওষুধ বিক্রেতাদের সংগঠন সূত্রের দাবি, করোনাকালের পরে রাজ্যে জাল ওষুধের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। তাই, ড্রাগ কন্ট্রোলও সতর্ক। ইতিমধ্যেই তারা একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে, যাতে সাধারণ মানুষ কিংবা ওষুধ ব্যবসায়ীরা সন্দেহভাজন ওষুধ দেখলে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে ওষুধ বিক্রেতাদের সংগঠনগুলোকেও অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে তারা সতর্ক হয়, কিউআর কোড যাচাই করে এবং শুধুই অনুমোদিত সংস্থা থেকে ওষুধ কেনে।

  • Link to this news (এই সময়)