বিধান সরকার: ব্রিগেডে এবার লক্ষ কন্ঠে সংবিধান পাঠ! কবে? জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে। অভিনব এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা সাফেরি সিদ্দিকি। হাজির থাকবেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদাদের একাংশ, বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের প্রতিনিধি ও বুদ্ধিজীবী।
দিন কয়েক আগেই গীতাপাঠের আসর বসেছিল ব্রিগেডে। '৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ' নামে সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সনাতন সংস্কৃতি সংসদ। ময়দানে 'গীতাপাঠে' যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, এমনকী প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। বস্তুত, ২০২৩ সালেও সনাতন সংস্কৃতি সংসদ উদ্যোগেই ব্রিগেডেই হয়েছিল গীতাপাঠ।
ব্রিগেডে 'লক্ষ কন্ঠে সংবিধান পাঠ' কিন্তু এই প্রথম। পীরজাদা সাফেরি সিদ্দিকি বলেন, 'আমরা গীতা পাঠের পালটা এটা করছি না। প্রত্যেকেরই নিজ ধর্ম পালনের অধিকার আছে। ছে।আমরা হিংসা বাড়াতে চাই না'। তাঁর দাবি, 'দেশের সংবিধান রক্ষার স্বার্থে আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের স্বার্থে সংবিধানের বিকৃতি ঘটাচ্ছে। আগামী দিনে যাতে এগুলো না হয় সেই কারণেই আমরা লক্ষ্য কন্ঠে সংবিধান পাঠ করব'।
এর আগে, ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে ব্রিগেডে জনসভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিসের অনুমতি মেলেনি। ফুরাফুরা শরীফের আর এক পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীর হুঁশিয়ারি, 'ব্রিগেড সভা নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু আগে পারমিশান নিতে হবে,না হলে ছেড়ে কথা বলব না'। তাঁর সাফ কথা, 'এর আগেও ব্রিগেডে সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। গাড়ি ভাড়া থেকে সব রকম প্রস্তুতি হয়েছিল। পুলিশের অনুমতি না মেলায় সেই সমাবেশ বাতিল হয়। এতে অনেক মানুষ হয়রান হয়। বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। আগে পারমিশান নেওয়া হোক'।
এদিকে ব্রিগেডে 'গীতাপাঠে' আমন্ত্রিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও, কিন্তু তিনি যাননি। কেন? মুখ্যমন্ত্রীর সোজাসাপ্টা জবাব, 'আমি কী করে যাব, বিজেপির অনুষ্ঠানে যাব কী করে! এটা যদি নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান হত, আমি নিশ্চয়ই যেতাম'। তিনি বলেন, 'আমি তো একটা পার্টি করি, আমার তো একটি ইডিওলজি আছে। আমি সবধর্মকে সম্মান করি। কিন্তু যেখানে বিজেপি সরাসরি জড়িত, সেখানে আমি যাব কী করে বলুন তো! যারা বলছে, আমরা নেতাজি ঘৃণা করি। গান্ধীজীকে মানি না। আমি সেখানে যেতে পারব না। আমার বাবা-মা আমাকে সেই শিক্ষা দেয়নি। আমাদের শিক্ষকরা এই শিক্ষা দেয়নি। বাংলাকে যাঁরা অসম্মান করে , যাঁরা বাংলার বিরোধী, তাদের সঙ্গে আমি নেই'।