• ভোট চুরি নিয়ে সংসদে অমিত শাহ-রাহুল গান্ধী তরজা
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সন্দীপ স্বর্ণকার, নয়াদিল্লি: রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, ভোট চুরি করে জিতছেন মোদি। অমিত শাহর দাবি, জনতার সমর্থনে বারবার ক্ষমতায় বসছেন নরেন্দ্র মোদি। তাই সুযোগ পেয়েই বুধবার লোকসভায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রাহুল গান্ধী। ‘ক্ষমতা থাকলে ভোট চুরি ইস্যুতে আমার সাংবাদিক সম্মেলনের উপর চর্চা করুন। আপনাকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও কোমরে হাত দিয়ে পালটা বললেন, আপনার কথায় আমি চলব না। আমি আমার মতোই নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে যা বলার বলব। কী বলব, আমিই ঠিক করব। যা শুনে ফের উঠে দাঁড়ান লোকসভার বিরোধী দলনেতা। বলেন, আপনি এত ঘাবড়ে গিয়েছেন কেন? এত ডিফেন্সসিভ কেন? আপনার চেহারায় তো ভয় চোখে পড়ছে। 

    ব্যস। বেঁধে গেল বিবাদ। আলোচনার বিষয় ছিল, নির্বাচনী সংস্কার। দু’দিন ধরে চলল চর্চা। বিজেপির পক্ষে শেষ বক্তা হিসেবে মাঠে নামেন অমিত শাহ। আর সেখানেই সরকার-বিরোধী উভয়পক্ষের হল্লায় উত্তাল হল সংসদ। স্লোগান উঠল, ভোট চোর গদ্দি ছোড়। পালটা অমিত শাহও বিজেপির উল্লাসে উজ্জীবিত হয়ে বলে গেলেন, আসল ভোট চুরি তো করে বল্লভভাই প্যাটেলের পথ আটকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন জওহরলাল নেহরু। ইন্দিরা গান্ধী রায়বেরিলির ভোট জিতেছিলেন চুরি করে। নাগরিক না হয়েও ভোটার হয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। সেখানে নরেন্দ্র মোদি ভোট চুরি করে জেতেননি। জিতছেনও না। জনতার রায়ে জিতছেন। যদিও অমিত শাহর বক্তব্যের বিরোধিতা করে ‘ওয়াক আউট’ করল কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, ডিএমকে, এনসিপি (এসপি)র মতো সমগ্র বিরোধী। 

    অমিত শাহর মন্তব্য, অনুপ্রবেশকারীদের ভোটের সমর্থ঩নেই আপনারা জিতেছেন। তাই এসআইআরে আপত্তি করছেন। আর আমি স্পষ্ট করে দিচ্ছি, একজনও বিদেশিকে ভোট দিতে দেব না। আমাদের নীতি হল, ডিকেক্ট, ডিলিট অ্যান্ড ডিপোর্ট। ২২১৬ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এখনও ৫৬৩ কিলোমিটার বেড়া না হওয়ায় দায়ী করলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেই। যদিও এই অভিযোগের প্রতিবাদ করেন সৌগত রায়। কিন্তু তাঁকে উপেক্ষার ভাষায় অমিত শাহ বলেন, দাদা, আপনার শরীর খারাপ, আমরা জানি। এতই যখন শরীর খারাপ, সংসদে এসে সভার পরিবেশ কেন খারাপ করছেন? বসে যান। 

    লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, দলের প্রবীণ নেতাকে অমিত শাহ উপহাস করলেও, তৃণমূলের কেউ প্রতিবাদ করেননি। আলোচনায় অংশ নিয়ে এদিন শতাব্দী রায়ের প্রশ্ন, অনুপ্রবেশ যদি হয়ে থাকে, তার দায় কার? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। কেন আটকাতে পারেননি? আর এখন এসআইআরের নামে মানুষকে হেনস্তা করছে। গব্বর সিংয়ের মতো আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এসআইআর। তবে এটাও শুনে রাখুন, এসব করেও বাংলায় ফের মুখ থুবড়ে পড়বে বিজেপি। জিতবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
  • Link to this news (বর্তমান)