• গোয়ায় সমুদ্রের কোলে এক অসম্পূর্ণ ভালোবাসার কাহিনি ‘ডোনা পাওলা’
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সৌগত গঙ্গোপাধ্যায়, গোয়া: লায়লা-মজনু, হীর-রাঞ্ঝা— নামগুলো শুনলেই হৃদয়ে বেজে ওঠে প্রেমের চিরন্তন বেদনার সুর। কিন্তু আপনি কি জানেন, গোয়ার সাগর তীরেও লুকিয়ে আছে এমনই এক অজানা অসম্পূর্ণ প্রেমের কাহিনি? ডোনা পাওলা, যেখানে বেদনার গভীরতা লায়লা-মজনুর চেয়ে কম নয়! পাঞ্জিম শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এক সমুদ্রসৈকত। সৈকতের সোনালি বালি আর গা ঘেঁষে লম্বা তাল গাছের সারি যেন ভালোবাসার শান্ত আশ্রয়। পাথরের গায়ে আছড়ে পড়া সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দে আজও মনে হয়, যুবতী পাওলা বুঝি তাঁর প্রেমিক গাসপারের জন্য বিরহের গান গাইছে। ভাষার ফারাক আর সমাজের রক্তচক্ষু ছিন্ন করেছে তাঁদের পবিত্র ভালোবাসাকে।

    ইতিহাস বলছে, পাওলা ছিলেন পর্তুগিজ শাসকের মেয়ে। আর গাসপার একজন মৎস্যজীবী। সাগরবেলায় ঝিনুক খোঁজার ছলে পরিচয়। সমুদ্র তরঙ্গের ঝংকারে প্রেমের জাগরণ। দু’জনে স্বপ্ন দেখেছিলেন একসঙ্গে ঘর বাঁধার। কিন্তু সমাজ তা মেনে নেয়নি। অসহ বেদনা সইতে না পেরে পাহাড় থেকে সমুদ্রে ঝাঁপ দেন পাওলা। আর কোনওদিন তাঁর খোঁজ মেলেনি। পর্তুগিজ তরুণীর শেষ নিঃশ্বাসের বেদনা ও ভালোবাসার গভীরতা আজও ডোনা পাওলা সৈকতের বাতাসে, ঢেউয়ে প্রতিধ্বনিত হয়। তাঁর চোখের জল আজও সমুদ্রতীরে বয়ে চলে। পাওলার স্মৃতিতে একটি মর্মর মূর্তিও সেখানে স্থাপিত হয়েছে সেখানে, ‘ইমেজ অব ইন্ডিয়া’। ঐক্যের প্রতীক এবং সেই নিষ্পাপ ভালোবাসারও।

    ন্যাশানাল ইনস্টিউট অব ওসিওনোগ্রাফির পাশেই এই সৈকত আজ পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র। মানুষ ডোনা পাওলা সৈকতে আসেন প্রেমের গল্প শুনতে, দেখতে, অনুভব করতে এবং আবেগের সাগরে ডুব দিতে। মনে পড়ে, ‘এক দুজেকে লিয়ে’তে কমল হাসান ও রতি অগ্নিহোত্রীর সেই প্রেমের কাহিনি? হ্যাঁ, পাওলা-গাসপারের গল্প থেকেই তা অনুপ্রাণিত। সুপারহিট সেই হিন্দি সিনেমার শ্যুটিংও হয়েছিল ডোনা পাওলা সমুদ্র সৈকতে!  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)