সংগৃহীত করের তুলনায় কেন্দ্রের থেকে কম টাকা ফেরত পেয়েছে ৭ রাজ্য
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি: কর বণ্টনের কেন্দ্রীয় ফর্মুলায় ‘দুয়োরানি’ দেশের সাত রাজ্য! মোট সংগৃহীত ট্যাক্সের মধ্যে এই সাত রাজ্যের যা অনুদান, কেন্দ্রের কাছ থেকে তারা ফেরত পায় তার থেকে কম অর্থ। আবার বেশ কিছু রাজ্য রীতিমতো ‘সুয়োরানি’। এই রাজ্যগুলি থেকে কেন্দ্র যে পরিমাণ কর সংগ্রহ করে, তার তুলনায় বহু বেশি টাকা ফিরে পায়। মোদি সরকারের তরফে সংসদে পেশ করা তথ্যের বিশ্লেষণে একথা জানা গিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কর সংগ্রহে অনুদান কম হলেও কেন্দ্রের তরফে সবচেয়ে বেশি অর্থ পায় উত্তরপ্রদেশ। ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য থেকে মোট সংগৃহীত করের ৪.৬ শতাংশ অর্থ গিয়েছে কেন্দ্রীয় কোষাগারে। অথচ এই পাঁচ বছরে কেন্দ্রের কাছ থেকে উত্তরপ্রদেশ ফেরত পেয়েছে ১৫.৮ শতাংশ টাকা। আবার ‘দুয়োরানি’র তালিকায় শীর্ষে মহারাষ্ট্র। পাঁচ বছরে কেন্দ্রের কোষাগারে জমা পড়া মোট করের ৩৬.১ শতাংশই মহারাষ্ট্র থেকে সংগৃহীত হয়েছে। অথচ তারা কেন্দ্রের কাছ থেকে ফিরে পেয়েছে মাত্র ৬.৬৫ শতাংশ অর্থ।
এব্যাপারে মহারাষ্ট্রের (-২৯.৪ শতাংশ) পরেই রয়েছে যথাক্রমে কর্ণাটক (-৮.৮ শতাংশ), হরিয়ানা (-৪.৩ শতাংশ), গুজরাত (-৩.৫ শতাংশ), তামিলনাড়ু (-২.৯৫ শতাংশ), তেলেঙ্গানা (-১.৪ শতাংশ) এবং গোয়া (-০.০৪ শতাংশ)। কিন্তু সংগৃহীত কর ও কেন্দ্রের থেকে ফেরতের ভাগে রাজ্যওয়াড়ি এই ফারাক কেন? এবিষয়ে সংসদে সরকারের ব্যাখ্যা, কোন রাজ্য করের কত টাকা ফেরত পাবে, তা নির্ধারিত হয়েছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক। অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, শেষ পাঁচটি অর্থবর্ষে সংগৃহীত করের মধ্যে কোন রাজ্য কত টাকা পাবে, সেই ফর্মুলা স্থির হয়েছিল অর্থ কমিশনের বেঁধে দেওয়া ছ’টি শর্তের ভিত্তিতে। কোন রাজ্য থেকে কত টাকা কর বাবদ কেন্দ্রের ঘরে এসেছে, এই বিষয়টি সেই ছ’টি শর্তের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তাহলে কোন ছ’টি শর্তের ভিত্তিতে রাজ্যগুলিকে করের অর্থ বণ্টন করা হয়েছে? অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পঙ্কজা মুন্ডে জানিয়েছেন, কোনও রাজ্যের জনসংখ্যা, এলাকা, সর্বোচ্চ উপার্জনকারী রাজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্যটির মাথাপিছু উপার্জনের ফারাক (ইনকাম ডিসট্যান্স), জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণমূলক পারফরম্যান্স, অরণ্য ও বাস্তুতন্ত্র এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক বৃদ্ধির প্রসার বা বৈষম্য দূরীকরণের মতো ক্ষেত্রগুলিতে রাজ্যটির ভূমিকা এই শর্তগুলির অধীনে রয়েছে।
আবার ‘সুয়োরানি’র তালিকায় উত্তরপ্রদেশের (১১.২ শতাংশ) পরেই বিহার। নীতীশ কুমারের রাজ্য থেকে পাঁচ বছরে যে পরিমাণ কর সংগ্রহ হয়েছে, কেন্দ্রের কাছ থেকে তার থেকে ৮ শতাংশ বেশি অর্থ পেয়েছে তারা। তৃতীয় ও চতুর্থস্থানে মধ্যপ্রদেশ (৫.৫ শতাংশ) ও রাজস্থান (৩.৫৫ শতাংশ)। পঞ্চম স্থানে অসম (৩.২ শতাংশ)।