• কোটি কোটি রোহিঙ্গা কোথায়? ভোটের ইস্যু হারিয়ে মাথায় হাত বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: আজ, বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে এসআইআরের ইনিউমারেশন পর্ব। ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা। অথচ এখনও পশ্চিমবঙ্গে কোটি কোটি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর সন্ধান মেলেনি। ভোটার তালিকা থেকে অবশ্যই বাদ চলে যাবে লক্ষ লক্ষ নাম। তারা হয় মৃত, নয় স্থানান্তরিত কিংবা ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আবার আবেদন করবে, শুনানিতে গিয়ে নথিপত্র জমা করবে। কিন্তু কোটি কোটি রোহিঙ্গা কোথায়? বিজেপি ও মোদি সরকার বারবার দাবি করেছে—একবার এসআইআর হলেই সব অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করা হবে এবং বিশুদ্ধ ভোটার তালিকা তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু সত্যিই যদি চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় কোটি কোটি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশির নাম বাদ যাওয়ার প্রমাণ না পাওয়া যায়, তাহলে আসন্ন বিধানসভা ভোটে বিজেপির বাংলায় ইস্যু কী হবে? এআইআর প্রক্রিয়ার প্রথম পর্ব সমাপ্ত হওয়ার পর এই উদ্বেগ প্রবল আকার ধারণ করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে।

    আলোচনা শুরু হয়েছে, এসআইআর করার পর তো আর অনুপ্রবেশ ইস্যু কাজ করবে না! কারণ, এই পর্ব সমাপ্ত হ঩লেই সব অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ও মায়ানমারে ‘পুশব্যাক’ করে দেওয়ার আগাম ঘোষণা করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে এসআইআরও সম্পূর্ণ হল, আবার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিরা রয়ে গেল—এই দাবি ভোটের সময় করলে দায় চাপবে নির্বাচন কমিশনের ঘাড়েই। ইনিউমারেশন প্রক্রিয়ার গতিপ্রকৃতি দেখে তাই ক্রমশ প্রবল শঙ্কা তৈরি হয়েছে বিজেপির সর্বোচ্চ স্তরে। যদিও এসআইআরের সপক্ষে মরিয়া প্রচার শেষলগ্নেও করেছে মোদি সরকার। স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার লোকসভায় নির্বাচনি সংস্কার নিয়ে আলোচনায় বলেছেন, ‘এসআইআরের বিরোধিতা করলে কিন্তু বিহারের মতোই হারতে হবে বাংলায়।’ 

    সাম্প্রতিক অতীতে বঙ্গবিজেপির কোনও শীর্ষ নেতা বলেছেন, এক কোটির বেশি রোহিঙ্গা আছে বাংলায়। কেউ বলেছেন, চূড়ান্ত তালিকায় অন্তত দেড় থেকে দু’কোটি রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি বাদ যাবে। এই অনুপ্রবেশকারীদের ভোটেই তৃণমূল জিতেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইনিউমারেশন প্রক্রিয়া যতই এগিয়েছে, তত এই বিজেপি নেতৃত্বই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে বাংলায়। তারা উলটে অভিযোগ করেছে, এসআইআর ঠিকমতো হচ্ছে না। বিএলও শাসকদের চাপে কাজ করছে। যদিও পালটা তৃণমূল বলেছে, ভোট সংক্রান্ত কাজ, সর্বদাই রাজ্য সরকারি কর্মী অথবা শিক্ষকদের মাধ্যমেই হয়। এই তথ্য বিজেপি কি আগে জানত না? 

    এদিন অমিত শাহ বলেন, ‘কখনও ইভিএম, কখনও এসআইআর নিয়ে বিরোধীরা কমিশনের বিরুদ্ধাচরণ করছে। ২০১৪ সালের পর থেকে এপর্যন্ত দেশজুড়ে লোকসভা ও বিধানসভা মিলে ৪১টি নির্বাচনে জয়ী হয়েছে এনডিএ। ৩০টি ভোটে জিতেছে বিরোধীরা। তাহলে কি বিরোধীদের জয় সঠিক পথে হয়নি?’ তাঁকে পালটা প্রশ্ন করেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেছেন, যে ভোটার তালিকা সংশোধন করতে নেমেছে নির্বাচন কমিশন, সেটির ভিত্তিতে ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট হয়েছে। তাহলে কি সেই নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ? মোদি সরকার তাহলে কি আবার লোকসভা ভোট করতে রাজি আছে এখন? 
  • Link to this news (বর্তমান)