সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: ‘ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে কাজ করতে হবে। মনে রাখবেন যখন যুদ্ধ হয় তখন সবাইকে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে হয়’। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে সম্প্রতি খবরের শিরোনামে চলে আসা কোচবিহারে দলীয় সভায় দাঁড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার এই বার্তা দিয়েছিলেন। সুপ্রিমোর ঐক্যের দাওয়াই কোচবিহারে তৃণমূলের অন্দরে কতটা কাজ করবে? তা নিয়েই চর্চা চলছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
লোকসভা নির্বাচনে ‘ঐক্যবদ্ধ’ তৃণমূল বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় কোচবিহার আসনটি। কিন্তু ভোটের উত্তাপ মিটতেই জেলায় শাসক দলের সেই পুরানো ব্যাধি ফিরে আসে। শুরু হয় নেতাদের আকচাআকচি। যা চলছে এখনও। জেলায় রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বনাম উদয়ন গুহ, অভিজিৎ দে ভৌমিক গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব চরম আকার নিয়েছে। এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ‘কামান’ দেগে চলেছেন। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে দলের প্রস্তুতি সভাতেও সব নেতৃত্ব এক হতে পারেনি। দলের নেতাদের এই বিবাদের খবর সুপ্রিমোর কানেও গিয়েছে। যদিও মঙ্গলবার রাসমেলা মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার আগে মঞ্চের নীচে সব নেতা একসঙ্গে বসেছিলেন। এরপরেই দলনেত্রী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন। সেই বক্তব্যের মধ্যেই তিনি ঐক্যের বার্তা দিয়ে যান।
কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারে কি দলের এই গোষ্ঠী কোন্দল থামবে? আলাদা করে কোনও উদ্যোগ কি দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব নেবে? কীভাবে এই ঐক্যের বার্তা নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে?
দলের বর্ষীয়ান নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, নেত্রীর নির্দেশ ১০০ শতাংশ মেনে চলা হবে। মন্ত্রী উদয়ন গুহের মন্তব্য, দেওয়ালের লিখন আর সময়ের ডাক যদি আমরা শুনতে না পারি তাহলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হবে। বিজেপিকে হারাতে সকলেই সকলের মতো কাজ করছেন। রবির বক্তব্য, সাম্প্রদায়িকতার যে বিষ ছড়ানো হচ্ছে, সেই বিষ দাঁত ভেঙে দিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ৯টি আসনেই জিতব। আমরা তারজন্য সবরকমভাবে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। সবক’টি আসন দলনেত্রীকে উপহার দিতে নিজেদের প্রস্তুত করছি। উদয়ন বলেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পেরেছি বলেই এত মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় এসেছে। আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধ রেখেই আমরা বিজেপিকে পরাজিত করব।