• পাহাড়পুর, গুড়াইল ফরেস্টে এবছরও পিকনিকে নিষেধাজ্ঞা
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তপন: তপনের জনপ্রিয় পাহাড়পুর ও গুড়াইল ফরেস্টে এবছরও পিকনিকের অনুমতি মিলল না। বড়দিনের আগেই প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা জারি করায় শীতের উৎসবমুখর মরশুমেও বন্ধ থাকছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার দুই বিখ্যাত পিকনিক স্পট। কয়েক বছর ধরে এই ফরেস্টে ঢোকা বন্ধ রয়েছে। এবারও পিকনিকের জন্য ওই দুই ফরেস্ট না খোলায় হতাশ জেলাবাসী। বালুরঘাটের রেঞ্জার তাপস কুণ্ডু বলেন, গত বছরের মতো এবছরও ফরেস্টে পিকনিক বন্ধ থাকবে। ২০ ডিসেম্বরের আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ফরেস্টের আশপাশে নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। পিকনিকের সময় কঠোর নজরদারি ও অভিযান চালানো হবে। 

    বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ড বা অনিয়ন্ত্রিত আচরণের ঝুঁকি এড়াতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে বনবিভাগ সূত্রে খবর। শীতকালে বনাঞ্চলে শুকনো পাতার আধিক্যে সামান্য অসতর্কতায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি ডিজে সাউন্ড সিস্টেম ও জনসমাগমে বন্যপ্রাণী প্রজননেও প্রভাব পড়তে পারে। পরিবেশের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে বলে মত বনকর্তাদের। 

    প্রতিবছর বড়দিনের আগ থেকেই শুরু হয়ে যায় পিকনিক মরশুম। বিশেষ করে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তপনের পাহাড়পুর ও গুড়াইল ফরেস্ট এলাকাগুলিতে মানুষের ঢল নামত। যেখানে-সেখানে উনুনে রান্না চলত, ডিজে সাউন্ড সিস্টেমে বাজত গান, তার সঙ্গে নাচ দেখা যেত।

    কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বনদপ্তরের নির্দেশে সেই চিত্র আর দেখা যাচ্ছে না। ফরেস্টের ভিতরে পিকনিকের অনুমতি বন্ধ থাকায় শুধু গুড়াইলে পয়লা জানুয়ারির পিকনিক মেলার ঐতিহ্য এখন টিকে আছে। সেটিও মূল জায়গা এড়িয়ে আশপাশের খোলা স্থানে সীমাবদ্ধ।

    পাহাড়পুর ও গুড়াইল ফরেস্টে এবছরও পিকনিক করার অনুমতি না দেওয়ায় মন খারাপ অনেকের। তপনের চকবলিরামের সাদ্দাম সরকারের কথায়, বন্ধুরা মিলে এবছর পাহাড়পুরে পিকনিক করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু আবারও নিষেধাজ্ঞার খবর শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। বছরের এই সময়টা আমরা অপেক্ষায় থাকি, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে একটু ঘোরাঘুরি, একটু আনন্দের জন্য। সেটাও হচ্ছে না। 

    পিকনিকের সময় ফরেস্টের চারপাশে অস্থায়ী দোকান বসত। গাড়িও চলাচল করত। ডেকোরেটররাও টেবিল-চেয়ার, রান্নার বাসনপত্র ভাড়া দিতেন। বনদপ্তরের সিদ্ধান্তে হতাশ তাঁরাও। পাহাড়পুরের তপন বর্মন বলেন, একসময় পিকনিক এলেই আমাদের ব্যবসার দিন ফিরত। দোকানপাট, চা-স্টল সব মিলিয়ে রোজগার হতো ভালো। এখন কয়েক বছর ধরে সেরকম কিছুই নেই। এবার আশায় ছিলাম। কিন্তু এবারও দুই ফরেস্টে পিকনিক করার অনুমতি দেওয়া হল না।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)