নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: কেন্দ্রের অর্থনৈতিক অবরোধ অব্যাহত! গ্রামীণ রাস্তা তৈরির টাকাও অমিল! তবু গ্রামীণ রোড নেটওয়ার্ক তৈরি থেকে পিছু হটছে না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পথশ্রী প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ে শিলিগুড়ি মহকুমায় তৈরি হবে ২০টি রাস্তা। যারমধ্যে প্লাস্টিক রোডের সংখ্যা ১৭টি। সমগ্র প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ২০ কোটি ৬৭ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা। আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে ভার্চুয়ালি রাস্তাগুলির শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, বাংলাকে বঞ্চিত করে রেখেছে বিজেপি সরকার। তারা রাস্তা তৈরির টাকা সহ বাংলার প্রাপ্য অর্থ দিচ্ছে না। তা হলেও আমরা মাথানত করছি না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় এবার মহকুমায় একগুচ্ছ রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে টেন্ডার ডেকে প্রকল্পগুলির ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের ‘হৃদয়’ শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকার রোড নেটওয়ার্ক চাঙ্গা করতে দীর্ঘদিন ধরে তৎপর পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর। প্রশাসন সূত্রের খবর, এবার পথশ্রী প্রকল্পের চতুর্থ দফায় চারটি ব্লকে তৈরি করা হবে ২০টি রাস্তা। যারমধ্যে ফাঁসিদেওয়া ব্লকেই সর্বাধিক ১৫টি রাস্তা। এছাড়া নকশালবাড়ি ও খড়িবাড়ি ব্লকে দু’টি করে এবং মাটিগাড়ায় একটি রাস্তা হবে। এরমধ্যে প্লাস্টিক রোডের সংখ্যা ১৭টি। সবমিলিয়ে এবার তৈরি করা হবে ৫০.৩৯ কিমি রাস্তা। প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের দায়িত্বে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা (ডব্লুবিএসআরডিএ)।
মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, এবার চারটি রাস্তা তৈরি করবে মহকুমা পরিষদ। যারমধ্যে তিনটিই প্লাস্টিক রোড। আর ডব্লুবিএসআরডিএ তৈরি করবে ১৬টি রাস্তা। যারমধ্যে ১৪টিই প্লাস্টিক রোড।
আজ, বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য জেলা পর্যায়ের অনুষ্ঠান নকশালবাড়ি ব্লকে হবে। সেখানে সভাধিপতি ছাড়াও দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক মণীশ মিশ্র, অতিরিক্ত জেলাশাসক (মহকুমা পরিষদ) নির্মাল্য ঘরামি সহ আধিকারিকরা হাজির থাকবেন। একই ধরনের অনুষ্ঠান ফাঁসিদেওয়া, মাটিগাড়া ও খড়িবাড়ি ব্লকেও হবে। ওই অনুষ্ঠানগুলিতে মহকুমা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও সদস্যরা থাকবেন। সভাধিপতি বলেন, ওই অনুষ্ঠানগুলির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে অনুষ্ঠান সুষ্ঠুমতো হবে বলেই আশা করছি।
প্রসঙ্গত, এর আগে পথশ্রী প্রকল্পের তিনটি পর্যায় হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রথম ফেজে ১২ কোটি ৩৭ লক্ষ ২৩ হাজার ৮২৭ টাকায় ৬৫.৬১ কিমি রাস্তা গড়েছে ডব্লুবিএসআরডিএ। প্রকল্পের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ফেজে মহকুমা পরিষদ ১২.৯৬ কিমি এবং ডব্লুবিএসআরডিএ ২৬.৪ কিমি রাস্তা গড়েছে। সভাধিপতি বলেন, কেন্দ্রের চরম অসহযোগিতার মধ্যেও প্রকল্পগুলি রূপায়িত করা হয়েছে। এবার প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হওয়ার পর মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় তৈরি হবে ১৪২.৪ কিমি রাস্তা। এতে গ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন চাঙ্গা হবে, তেমন গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতিও হবে।