• মুড়ি কিংবা মোমোর ব্যবসাতেও ঢালাও ভর্তুকি, পাশে সরকার, ফ্যাক্টরি গড়ছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: পাশে সরকার। ফ্যাক্টরি গড়ছে জলপাইগুড়ির ক্ষুদ্র চা চাষিরা। রাজগঞ্জ ও বেলাকোবায় ফার্মার্স ক্লাব ও সমিতি গড়ে ক্ষুদ্র চা চাষিরা ফ্যাক্টরি তৈরি করছেন। প্রতিটি ফ্যাক্টরির জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা। এর মধ্যে ফ্যাক্টরি পিছু ২ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা সরকারি ভর্তুকি মিলছে। এ ব্যাপারে সরকারি অনুমোদনের পাশাপাশি টি বোর্ডও নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছে। ফলে ওই চা ফ্যাক্টরি তৈরির কাজ শুরু হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

    এদিকে, বাড়িতে মুড়ি ভেজে তা প্যাকেটজাত করে বিক্রি কিংবা কেউ যদি ফ্রায়েড মোমো বা ফ্রোজেন মোমো প্যাকেটজাত করে ব্যবসা করতে চান, সেক্ষেত্রেও ঢালাও সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এজন্য আগ্রহী ব্যক্তিকে কোথাও ছোটাছুটি করতে হবে না। সরাসরি জেলার খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ দপ্তরে এসে নিজের ব্যবসার কথা জানালেই হবে। অনলাইনে গোটা প্রক্রিয়া সারতে সাহায্য করবেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরাই।

    নিজেদের ফ্যাক্টরির মধ্যে দিয়ে ক্ষুদ্র চা চাষিরা আত্মনির্ভরতার পথে অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবেন বলে দাবি প্রশাসনের। এতদিন কাঁচা পাতা বিক্রির জন্য ক্ষুদ্র চা চাষিদের পুরোপুরিভাবে বটলিফ ফ্যাক্টরির উপর নির্ভর করতে হত। ফলে ন্যায্য দাম মিলছে না বলে প্রায়শই অভিযোগ তুলতেন তাঁরা। কখনও আবার গুণমান খারাপ বলে বটলিফের একাংশ পাতা কিনতে চাইত না বলে অভিযোগ। ক্ষুদ্র চা চাষিদের নিজেদের ফ্যাক্টরি হয়ে গেলে কাঁচা পাতা বিক্রি এবং তার দাম নিয়ে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।

    জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, রাজগঞ্জের কুকুরজান ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি এবং বেলাকোবা সবুজায়ন ফার্মার্স ক্লাব সরকারি সাহায্যে নিজেদের টি ফ্যাক্টরি গড়তে চলেছে। ওই দু’টি সমিতিতে প্রায় সাড়ে তিনশো ক্ষুদ্র চা চাষি যুক্ত রয়েছেন। বাগানের কাঁচা পাতা বিক্রি নিয়ে তাঁদের আর কোনও সমস্যা রইল না। তবে শুধু ওই সাড়ে তিনশো জন নন, আশপাশের কোনও ক্ষুদ্র চাষিও যদি ওই ফ্যাক্টরিতে চা পাতা দিতে চান, কিংবা পাতার বিনিময়ে চা পেতে চান, সেটাও পাবেন।

    জলপাইগুড়ি জেলা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ উন্নয়ন আধিকারিক অরুণাভ বল বলেন, পিএম ফরমালাইজেশন অব মাইক্রো ফুড প্রসেসিং এন্টারপ্রাইজ স্কিমে (পিএমএফএমই) জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ও বেলাকোবায় ক্ষুদ্র চা চাষিদের জন্য দু’টি টি প্রসেসিং ইউনিট তৈরি হচ্ছে। এতে রাজ্যেরও শেয়ার রয়েছে। তাঁর দাবি, ধূপগুড়ি এবং কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে আরও দু’টি এ ধরনের টি প্রসেসিং ইউনিট তৈরির চেষ্টা চলছে। তাঁর সংযোজন, প্যাকেটজাত যে কোনও খাবারের ব্যবসায় সরকারি ভর্তুকি পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কেউ যদি বাড়িতে মুড়ি ভেজে তা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করতে চান কিংবা মোমো বানিয়ে তা প্যাকেটজাত করে ব্যবসা করতে চান অথবা টক দই প্যাকেটজাত করতে বিক্রির ইচ্ছে প্রকাশ করেন, সেক্ষেত্রেও তাঁরা সরকারি ভর্তুকি পাবেন। বিভিন্ন খাতে প্রকল্প খরচের উপর ৩৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সরকারি ভর্তুকি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এনিয়ে আমরা প্রচারও করছি।
  • Link to this news (বর্তমান)