• ইন্ডিগোর বিপর্যয়ের দোসর ট্রেন বাতিল, দুর্ভোগ চরমে
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের পাশ্ববর্তী বড়জোড়ার বাসিন্দা সৈকত মুখোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি তুলেছেন, যতদিন না ট্রেন লাইনের সংস্কার শেষ হচ্ছে সব ট্রেন বাতিল করা হোক। আয়ের জন্য ট্রেন চালিয়ে লেট করিয়ে যাত্রী হেনস্থা বন্ধ হোক। সৈকতবাবুর পোস্টে আয়াত মণ্ডল কমেন্ট করেন, দুর্গাপুর থেকে বর্ধমান ট্রেনে যেতে তাঁর সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা। আবার পেশায় ডিএসপি-র কর্মী বার্নপুরের বাসিন্দা ট্রেনের নিত্য যাত্রী মলয় বিট সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, পূর্ব রেলের ইন্টারলকিংয়ের নামে যাত্রী সাধারণ আর কতদিন ভুগবে। একেবারে লোকাল ট্রেন উঠিয়ে দিলেই পারে। 

    শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কমেন্টসের ঝড়ই  নয়, ট্রেনের এই বিভ্রাটের জেরে মানুষের ক্ষোভ স্টেশনগুলিতেও আঁছড়ে পড়ছে। আসানসোল-বর্ধমান রুটে রেলপথ সংস্কার, নন ইন্টারলকিংয়ের কাজের জন্য নভেম্বর থেকে তৎপর হয়েছে রেল। এই কাজের জন্য বহু ট্রেন বাতিল হচ্ছে। বাতিল হওয়া মেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলির নিত্যযাত্রীদের বেশিরভাগই গরিব মানুষ। যার জেরে মানুষের যাতায়াতে চরম সমস্যা হচ্ছে। ট্রেন বাতিল হওয়ায় যাত্রীদের আস্থা পেতে এসবিএসটিসি-র কাছে বাড়তি বাস চালিয়ে আয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু সরকারি সংস্থা সেই উদ্যোগ নেয়নি। দিনের শেষে চূড়ান্ত হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মেমু ট্রেন হোক বা রাজধানী এই রুটে সব ট্রেন অত্যাধিক লেটে চলছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেনেই আটকে থাকছেন যাত্রীরা। সমস্যায় পড়ছে শিশু, প্রবীণ ও মহিলারা। কিন্তু এই অবস্থাতেও রেল প্রশাসন উদাসীন। 

    বুধবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর স্টেশনের স্ট্যাটাস খতিয়ে দেখা যায়, হাওড়াগামী ব্ল্যাক ডায়মণ্ড ৪৮ মিটিন লেট, দিল্লিগামী রাজাধানী ৪৩ মিনিট লেট, বন্দে ভারত ২০ মিনিট লেট। ময়ুরাক্ষী এক্সপ্রেস ২ ঘণ্টা লেট। এভাবেই ট্রেন কার্যত যাত্রীদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছে। যার শিকার খেটেখাওয়া মানুষ থেকে প্রিমিয়াম ট্রেনের যাত্রীরাও। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদ প্রকাশ বলেন, নন ইন্টারলকিংয়ের কাজ হওয়ার সময় হ্যান্ড সিগন্যালিং বা পেপার সিগন্যালিংয়ের মাধ্যমে ট্রেন চালাতে হয়। যাত্রী নিরাপত্তার জন্যই ধীরগতিতে ট্রেন চালাতে হচ্ছে। 

    শিল্পাঞ্চলে ট্রেনের যখন এই হাল তখন আকাশপথও আতঙ্কের। ইন্ডিগোর বিভ্রাটের জেরে বিমান পরিষেবায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে অণ্ডাল বিমান বন্দরে। এই এয়ারপোর্ট থেকে যে সব বিমান যাতায়াত করে তার বেশিরভাগই ইন্ডিগোর। এবার ইন্ডিগোর বিমান বাতিলের রেশ এখানেও পড়েছে। অণ্ডাল থেকে চেন্নাই ও হায়দ্রবাদ ফ্লাইট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাতিল রয়েছে। কিছু ফ্লাইট চললেও তার সময়ের কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। কাজেই বিমান ও ট্রেনের এই বিপর্যয় নিয়ে বীতশ্রদ্ধ শিল্পাঞ্চলবাসী। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)