• নেই শৌচাগার, পানীয় জলের বন্দোবস্ত, তারাপীঠে চূড়ান্ত সমস্যায় পুণ্যার্থীরা
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র তারাপীঠের উন্নয়নে রাজ্য সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত শৌচাগার, পানীয় জল ইত্যাদি মৌলিক সুযোগ সুবিধার অভাব রয়ে গিয়েছে। যার ফলে প্রচুর ভক্ত এবং পর্যটকের সমস্যা হচ্ছে। 

    তারাপীঠের উন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। ‘তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ গঠন করে উন্নয়ন যজ্ঞ চলেছে। প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার ভক্ত ও পর্যটক আসেন। কিন্তু মহিলা এবং বয়স্ক পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েন। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় সাধারণের ব্যবহার্য শৌচাগার না থাকায় তাঁদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যেতে হয়। মন্দিরের আশেপাশের রাস্তার ধারে নেই পানীয় জলের বন্দোবস্ত। পুণ্যার্থীদের জল কিনে খেতে হয়। তাঁদের শৌচকর্মের জন্য হোটেলগুলির শরণাপন্ন হতে হয়। অনেকে ফিরিয়ে দেয়, কেউ মানবিকতার খাতিরে তাঁদের অনুরোধ মেনে নেন। মন্দির যাওয়ার প্রধান দুটি রাস্তায় একটিও সাধারণ শৌচাগার নেই। বিশেষ বিশেষ তিথিতে যখন মারাত্মক ভিড় হয়, তখন মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে।

    কলকাতা থেকে সপরিবারে আসা অরিন্দম সাঁতরা বলেন, তারাপীঠে এত উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে বয়স্ক ও মহিলাদের খুবই অসুবিধে হচ্ছে। সরকারের জরুরি ভিত্তিতে এই সমস্যাটির সমাধান করা উচিত।  

    বর্ধমান থেকে বাইক নিয়ে তারাপীঠে আসা দুই বন্ধুর একজন শৈলেন বসু বলেন, এখানে এসে সময়টা দারুণ কেটেছে। কিন্তু শৌচাগার না থাকাটা দুঃস্বপ্নের মতো। অন্তত হোটেলগুলিকে তাদের শৌচাগার পর্যটকদের ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া বাধ্যতামূলক করা উচিত। হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুনীল গিরি বলেন, অধিকাংশ হোটেলের রুমের সঙ্গেই অ্যাটাচড্ বাথরুম। কমন তো নেই। ফলে হোটেলগুলি ব্যবহার না করতেও দিতে পারে। এটা সরকারকেই ব্যবস্থা করতে হবে।   মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে মন্দির সংলগ্ন এলাকায় শৌচাগার ছিল। বর্তমানে উন্নয়নমূলক কাজ চলায় সেটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পর্যটকদের। তীর্থযাত্রীদের জন্য পানীয় জলেরও ব্যবস্থা নেই। অনেক পুণ্যার্থীরই বোতলবন্দি জল কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। কিন্তু তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন জল কিনে খেতে। এই সুযোগে মিনারেল ওয়াটারের নামে বোতলবন্দি সাধারণ জল বিক্রি করে তীর্থযাত্রীদের ঠকাচ্ছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। সেইসব জলে আর্সেনিক, ফ্লোরাইডের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে কি না, তা পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থাই নেই। 

    যদিও টিআরডিএর ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, কিছু মানুষের জন্যই তারাপীঠের সেভাবে উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। কেউই জায়গা দিতে চাইছে না। সবাই তো ব্যবসা করার জন্য বসে আছেন। কেউ সহযোগিতা করে না। সরকারি জায়গা থাকলেও সেখানে বলা হচ্ছে, বাড়ির সামনে বা দোকানের পাশে টয়লটে করতে দেব না। ফলে ইচ্ছে থাকলেও করা যাচ্ছে না। তবে পানীয় জলের বিষয়টি নিয়ে আমরা বৈঠকে বসছি। পাবলিক টয়লটের বিষয়টি ভাবা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)