বাড়িতে দু’টি আলো, একটি পাখা, বিদ্যুৎ বিল ২ লক্ষ টাকা
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, ঘাটাল: বাড়িতে একা থাকেন। বাড়িতে বিপিএল মিটারে একটি পাখা, দু’টি আলো জ্বলে। এমনই পরিবারে বিদ্যুৎ বিল এসেছে দু’ লক্ষাধিক টাকার। চন্দ্রকোণা থানার ধাইখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ গোলাম নবী খান ওই বিল দেখে রাতে ঘুমোতে পারছেন না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের ঘাটালের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বদেব বিশ্বাস বলেন, একসঙ্গে অত বিল আসার কথা নয়। আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওই ভদ্রলোক ২০১০ সাল থেকে বিদ্যুৎ বিল মেটাননি। বিল বাড়তে বাড়তে ওই জায়গায় পৌঁছেছে।
গোলাম নবী খান ভূমিহীন। বহু বছর আগে শিলাবতী নদীর গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে তাঁর একমাত্র বসতবাড়ি। তাঁর আর কেউ নেই, তাই মেয়ের বাড়িতেই থাকতেন। কয়েক বছর আগে একটি বাড়ি তৈরি করে সেখানে একাই থাকেন। দরিদ্র হওয়ায় তিনি বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে বিপিএল ক্যাটেগরির একটি মিটারও পান।
গোলাম নবী খানের অভিযোগ, বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়ার পর থেকে তাঁর কাছে বিলই আসেনি। হঠাৎ করে কিছু দিন আগে এক লক্ষ ৯৩ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল আসে। সেই বিল থেকে চমকে যান। তিনি বলেন, অত টাকা বিল হওয়ার কথাই নয়। বাড়িতে মাত্র দু’টি আলো জ্বলে এবং একটি পাখা চলে। তাই ওই বিল কেন এসেছে, তা জানতে জানতেই আরও একটি বিল এসে যায়। সেটি দু’ লক্ষ ৮১৩ টাকার। যেটা আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেওয়ার দিন ঠিক করে দিয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তর।
বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপিএল ক্যাটেগরির বিদ্যুৎ সংযোগে প্রথম তিন মাসে যদি কেউ ৭৫ ইউনিট বা তার নীচে বিদ্যুৎ খরচ করেন সে ক্ষেত্রে তাঁকে বিল পেমেন্ট করতে হয় না। তিন মাসে ৭৫ ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ খরচ হলে নিয়ম মাফিক তাকে বিল মেটাতে হয়। বৃদ্ধের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে।
বিল মুকুবের জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন বৃদ্ধ। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। দপ্তরের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিল হাতে গোলাম নবী খান।-নিজস্ব চিত্র