• পড়ুয়াদের ডিজিটাল প্রতারণা থেকে বাঁচার পাঠ দেবে পুলিশ
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: দেশের ১০টি জেলা সাইবার ক্রাইমের ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দশ জেলার সা‌ইবার অপরাধীরা দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে রেখেছে। তাদের থেকে সমাজের সর্বস্তরের বাসিন্দাদের রক্ষা করতে পড়ুয়াদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেছে পুলিশ।  স্কুল-কলেজে ঘুরবে পুলিশের ‘সা‌ইবার গাড়ি’। প্রতারকরা কীভাবে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে কিংবা লিঙ্ক পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট সাফ করে, সেসব কিছু হাতে-কলমে পড়ুয়াদের শেখানো হবে। সচেতন হওয়ার পর তারা সাইবার ক্রাইম নিয়ে অভিভাবকদের পাঠ দেবে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন, বিশেষ গাড়ি তৈরির কাজ চলছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাড়ি যাবে। পুলিশ আধিকারিকরা ভিডিও ক্লিপসের মাধ্যমে পড়ুয়াদের সচেতন করবেন। কিছুদিনের মধ্যেই এই কর্মসূচি শুরু হবে। সাইবার ক্রাইম থেকে জেলার বাসিন্দাদের রক্ষা করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লাগাতার প্রচার চালানোর পরও জেলার অনেকেই ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে পড়ছেন। কয়েকদিন আগে জেলার চার কর্মাধ্যক্ষ ডিজিটাল অ্যারেস্ট হয়েছিলেন। এক জনপ্রতিনিধি সেক্সটরশনের শিকার হয়েছেন। অনেকেই প্রতারকদের ওটিপি শেয়ার করছেন। প্রতিদিন সাইবার ক্রাইম থানায় এধরনের লিখিত অভিযোগ হচ্ছে। বিভিন্ন বয়সের লোকজন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। প্রতারকরা এআই ব্যবহার করেও প্রতারণা করছে। পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে সাইবার অপরাধে রাশ টানার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। সাইবার গাড়ির মধ্যে অত্যাধুনিক টেকনোলজি থাকবে। প্রতারকরা কীভাবে ফোন করে, তারা নম্বর কোথা থেকে জোগাড় করে, সেসব কিছুই ভিডিওর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে। লাগাতার প্রচার করার পরও সাইবার অপরাধের সংখ্যা বাড়ায় পুলিশও উদ্বেগে রয়েছে। প্রতারকরা শুধু আমজনতা নয়, পুলিশ আধিকারিকদেরও টার্গেট করছে। কয়েকদিন আগে তারা বর্ধমান রেঞ্জের ডিআইজির ছবি ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খোলে। তাঁর পরিচিতদের কাছে টাকা চাওয়া হয়। পুলিশ বিষয়টি জানার পরই কড়া পদক্ষেপ নেয়। তারা ভরতপুর থেকে এক সাইবার প্রতারককে গ্রেফতার করে। জেরায় ধৃত জানিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের ছবি ব্যবহার করে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। অনেকের কাছে টাকা হাতিয়েছে। এধরনের অপরাধ থেকেও কীভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে, সেটাও ওই গাড়িতে ফুটিয়ে তোলা হবে। পুলিশের দাবি, পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হবে। তাতে সাইবার ক্রাইম মোকাবিলা করা সহজ হবে। তারা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বোঝানোর পাশাপাশি প্রতিবেশীদেরও সচেতন করবে। তাছাড়া, তারা নিজেরাও রক্ষা পাবে। প্রতারকরা অল্পবয়সিদের সেক্সটরশনের জালে ফাঁসাতে চায়। তা থেকে যাতে তারা রেহাই পায়, সেবিষয়েও তাদের সতর্ক করা হবে। প্রতিটি জেলাতেই সাইবার সচেতনতার পাঠ দেওয়া শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)