বাড়ির ছাদ-ফ্ল্যাটে শৌখিন বাগান তৈরির প্রতি ঝোঁক ক্রমশ বাড়ছে
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বাড়ির ছাদে টবে ফুটছে চন্দ্রমল্লিকা, পিটুনিয়া, গাঁদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, গোলাপ সহ নানা বাহারি ফুল। রয়েছে শিউলি, স্থলপদ্ম, বোগেনভেলিয়ার মতো হরেকরকম গাছ। প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদেই এমন শৌখিন বাগান শোভা বাড়াচ্ছে। কেউ ছোট ব্যালকনিতে, আবার কেউ খোলা ছাদেই পছন্দমতো গাছ লাগিয়ে ছোট বাগান তৈরি করছেন। শীতের সকালে কিংবা পড়ন্ত বিকেলে সেই বাগানে দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় কাটাতে চাইছেন সকলে।
সময়ের সঙ্গে শহরমুখী মানুষের স্রোত প্রতিদিন বাড়ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। সবুজ কমে যাচ্ছে। ফলে দিনদিন ‘যান্ত্রিক’ হয়ে উঠছে প্রতিটি শহর। থাকার জায়গা সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বড় বাগান করার সুযোগ নেই। সেকারণে ছাদ ও ব্যালকনি সবুজের ঠিকানা হয়ে উঠছে। তবে, ছাদবাগান নতুন কোনও ধারণা নয়। যিশুখ্রিস্টের জন্মের আগেও ছাদবাগান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ব্যাবিলনের সেই ঝুলন্ত উদ্যানের কথা তো আমরা সবাই জানি। সময়ের সঙ্গে ছাদবাগানের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। কংক্রিটময় জীবনযাপনে ছোট একটু খোলা বাগান অক্সিজেন জোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দুই কামরার ফ্ল্যাটের ব্যালকনিও হয়ে উঠছে সবুজের ক্যানভাস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরের সব ছাদে পরিকল্পিতভাবে বাগান করা হলে তাপমাত্রা ৩-৫ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
বহরমপুরের স্কুলশিক্ষক কৌশিক পাল বলেন, শৌখিন গাছ লাগানো আমার বরাবরই শখ। বাড়ির ছাদে সুন্দর একটা বাগান করেছি। সেখানে ফুল গাছ যেমন আছে, ফলের গাছও লাগিয়েছি। শুধু শীতকাল নয়, বারোমাসই ছাদবাগান করার চেষ্টা করি। নিজের বাড়িতে প্রয়োজনীয় ফল ও ফুলের গাছ ছাড়াও অনেক বাহারি গাছ লাগানো হয়েছে। ছাদবাগান দেখতে খুব সুন্দর লাগে। পাড়া-প্রতিবেশী এবং বন্ধুরাও এসে ছাদবাগানে সময় কাটান।
ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানের পাশের চারাগাছ বিক্রেতা লুৎফর শেখ বলেন, শীতের সময়ই সব থেকে বেশি গাছ বিক্রি করি। এখন শীতের মরশুমের ফুলের গাছ সব থেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে। অনেকে ফলের গাছের অর্ডার দেন। অর্ডার পেলে আমরা নার্সারি থেকে এনে দেই। লালবাগের বাসিন্দা উৎসা ঘোষ বলেন, মুর্শিদাবাদে আমাদের নিজেদের বাড়িতে একটা ভালো ফল ও ফুলের বাগান আছে। কিন্তু বহরমপুরে ফ্ল্যাটে সেভাবে বড় বাগান করার সুযোগ নেই। সেকারণে ব্যালকনিতেই টব সাজিয়ে প্রতি শীতের সময় বাগান করি। তবে এবার ইচ্ছা আছে শীত চলে গেলেও কিছু ফল ও বারোমাস ফুল দেয় এমন গাছ লাগিয়ে রাখব। প্রতি মুহূর্তে সবুজ কমছে। আমাদের চার দেওয়ালের মধ্যে একটু জায়গা করে সবুজের জায়গা দিতে পারলে তো ভালোই হয়। -নিজস্ব চিত্র