কোকোন্দ গ্রামের দিঘি সংস্কার করে মাছ চাষের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, আরামবাগ: মাছচাষের জন্য গোঘাটের কোকোন্দ গ্রামের দিঘিটির টেন্ডার ডেকেও আগ্রহী কাউকে পাওয়া যায়নি। ফলে দিঘিটি প্রায় ১৪ বছর ধরে অনাবাদী হয়ে পড়ে রয়েছে। দিঘিটি জলজ গাছ, পানা, শ্যাওলা, পদ্মফুলে ভরে গিয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে দিঘির জল। গোঘাট ২ ব্লকের বদনগঞ্জ-ফুলুই ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হাসমত আলি খাঁ বলেন, এই দিঘিটি যাতে সংস্কার করে মাছ চাষের উপযোগী করা যায়, সে নিয়ে আমরা জেলা পরিষদে বারবার লিখিত ভাবে জানিয়েছি। দিঘিটি সংস্কার করে যদি মাছ চাষ করা হয়, তাহলে সরকারের আয়ও হবে, আবার অনেকের কর্মসংস্থান হবে। পাশাপাশি বাজারে মাছের জোগান বাড়বে। বাজারে মাছের দাম কমবে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোকোন্দ গ্রামে প্রায় ৯ একর এলাকাজুড়ে এই দিঘিটি অবস্থিত। বাম আমলে দিঘিটির টেন্ডার ডেকে মাছ চাষ শুরু হয়। ৩ বছরের চুক্তিতে দিঘিটির বরাত পেয়েছিল কোকোন্দ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড। সেই সময়ে মাছ ধরার সরঞ্জাম, মাছের খাবার, মাছ রাখার ট্রে ওই সমবায় সমিতির একটি ঘরে রাখা হতো। দিঘির জল ছিল কাচের মত স্বচ্ছ।
ছায়ার জন্য দিঘির পাড়ে লাগানো হয় আম গাছ। সিমেন্টের একটি ঘাটও বাঁধানো হয়। সমিতির সদস্যরা গোঘাট ১ ব্লকের বিভিন্ন মৎস্যচাষীর থেকে এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুর গ্রাম থেকে চারা মাছ এনে দিঘিতে ছাড়তেন।
মাছের খাবার ছড়ানোর জন্য একটি নৌকাও কেনা হয়েছিল। মাছ ধরার জন্যও এই নৌকা ব্যবহার হতো। টেন্ডার নিয়ে এই দিঘিতে মাছ চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পাওয়া যেত। টেন্ডারের মূল্য ভালো ওঠায় সরকারি আয়ও ভালো হতো। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের সময়ে রাজনৈতিক অশান্তিতে মাছ চাষ বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত দিঘিতে মাছ চাষ শুরু করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বর্তমানে দিঘিটির গভীরতা কমে গিয়েছে, পদ্মফুল, শ্যাওলা, পানা সহ জলজ প্রজাতির গাছে দিঘি ভরে গিয়েছে।
গাছ পচে দিঘির জলকে দূষিত হয়ে গিয়েছে। বাঁধানো ঘাটটিরও কিছু কিছু জায়গা ভেঙে গিয়েছে। বর্তমানে মাছ চাষের অযোগ্য হয়ে পড়েছে দিঘিটি। সরকারের আয়ও বন্ধ। স্থানীয়রা দিঘিটির সংস্কার করে ফের মাছ চাষের দাবিতে সরব হয়েছেন।