• এসআইআর শুনানি হবে শুধু ডিএম অফিসে, ক্যামেরায় নজর কমিশনের
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আজ শেষ ইনিউমারেশন পর্ব। এবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পালা। আর ১৬ ডিসেম্বর খসড়া তালিকা প্রকাশের দিন থেকেই শুরু হবে শুনানি পর্ব। জানা যাচ্ছে, প্রতিটি জেলায় জেলাশাসক বা ডিএমের কার্যালয়ে হবে শুনানি। এছাড়াও উল্লেখ করার মতো বিষয় হল, জারি হয়েছে শুনানি পর্বের ওয়েব কাস্টিংয়ের নির্দেশ। অর্থাৎ, গোটা প্রক্রিয়া ক্যামেরায় নজরদারি করবে কমিশন। 

    বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বুধবার পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ইনিউমারেশন পর্ব শেষের পরই খসড়া তালিকা প্রকাশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ১২ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কাজ চলবে। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর, তালিকা নিয়ে আপত্তি জানানো যাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। এছাড়াও তালিকা প্রকাশের দিন থেকেই শুনানি সংক্রান্ত নোটিশ পাঠানো হবে ভোটারদের। ওইদিনই শুরু হবে শুনানি প্রক্রিয়া। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে। কোনও ভোটার নির্ধারিত শুনানির দিন উপস্থিত না হতে পারলেও ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুযোগ পাবেন।

    মূলত ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের বা আত্মীয়ের নাম না থাকা অর্থাৎ ‘আনম্যাপ’ ভোটারদের শুনানির জন্য ডাকা হবে। সেই নোটিশ পাওয়ার পর নির্ধারিত দিনে উপস্থিত হয়ে তাঁদের কমিশন নির্ধারিত ১১টি নথির মধ্যে একটি পেশ করতে হবে। বুধবার রাত পর্যন্ত এমন ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ। এছাড়াও যেসব ভোটারের ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে ম্যাপিং ও ম্যাচিং হয়ে গিয়েছে, কিন্তু সেই ম্যপিং নিয়ে কমিশনের সন্দেহ রয়েছে, এমন ভোটারদেরও শুনানির জন্য ডাকা হতে পারে।  সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনুযায়ী তাঁদের কমিশনের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি ফর্মে থাকা তথ্যের সপক্ষে প্রমাণ দাখিল করতে হবে। গোটা শুনানি প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করার জন্য প্রতিটি শুনানি কেন্দ্রে ওয়েবকাস্টিংয়ের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সেই প্রক্রিয়ায় নজরদারি চালাবেন কমিশন কর্তারা। সেই সঙ্গে সব ফুটেজ সংরক্ষণও করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। 

    এদিকে, এদিন পর্যন্ত খসড়া তালিকা থেকে থেকে ভোটার বাদের সংখ্যা হয়েছে ৫৭ লক্ষ ৫২ হাজার ২০৭। এর মধ্যে মৃত, স্থানান্তরিত এবং অনুপস্থিত ভোটাররা রয়েছেন। কমিশনের তরফে এদিন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, খসড়া তালিকা প্রকাশের আগেই এই তালিকা এসআইআরের কাজে রাজনৈতিক দলের তরফে নিযুক্ত বুথ লেভেল এজেন্ট বা বিএলএদের হাতে তুলে দিতে হবে। 

    এছাড়া আরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কমিশন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমান বুথের সংখ্যা অনুযায়ী খসড়া তালিকা প্রকাশ করতে হবে। রাজ্যে যে বর্ধিত ১৪ হাজার বুথ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তাতে এখনই স্বীকৃতি দিচ্ছে না কমিশন। কারণ এর আগে শহরাঞ্চলে বহুতল, আবাসন ও বস্তি এলাকায় বুথ তৈরির জন্য জেলাশাসকদের সমীক্ষা করে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু রাজ্যের জেলাশাসকদের তরফে জমা পড়া এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ কমিশন। সেই কারণে ফের গ্রুপ হাউজিং সোসাইটি, বস্তি এলাকা এবং আবাসনগুলিতে নতুন করে সমীক্ষার নির্দেশ জারি হয়েছে। ২৫০টি বাড়ি অথবা ৫০০ ভোটার রয়েছেন, এমন এলাকা চিহ্নিত করে ভোটকেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব দিতে হবে জেলাশাসকদের। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে। তারপর নতুন বুথ তৈরির প্রস্তাবে কমিশন ছাড়পত্র দেবে। এবং বর্ধিত বুথ অনুযায়ী প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। 
  • Link to this news (বর্তমান)