মাটির বদলে প্লাস্টিকের কৌটোয় চলছে খেজুর রস সংগ্রহ, স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বসিরহাট: স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলছে খেজুর রস সংগ্রহ।শীত আসতেই গ্রাম, গঞ্জের শিউলিরা প্রস্তুত হচ্ছেন খেজুরের রস সংগ্রহ করতে। কিন্তু তাতে লুকিয়ে থাকছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। কারণ মাটির ভাঁড়ের পরিবর্তে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাস্টিকের বোতল। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। আগে আগুনে পুড়িয়ে গরম জল দিয়ে মাটির ভাঁড়গুলি জীবাণুমুক্ত করা হতো। কিন্তু এখন তার নামগন্ধও নেই।
কুমোরপাড়া সূত্রে শোনা গিয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে মাটির ভাঁড়ের চাহিদা দিনের পর দিন কমছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিউলি জানান, এক একটি ভাঁড়ের দাম প্রায় ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। তার উপরে মাটির ভাঁড় ভেঙে যায়। তাছাড়া রস চুরি করতে গিয়ে কখনও কখনও অসাধু লোকেরা পাথর ছুঁড়ে ভাড় ভেঙে দেন। এইসব কারণেই আমরা প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করি। তাছাড়া খেজুর রস থেকে তৈরি হওয়া গুড়ের মতো কৃত্রিম ফ্লেভার এখন বাজারে মিলছে। ফলে প্রাকৃতিক গুড়ের চাহিদা কমেছে, দামও কমেছে। এমন অবস্থায় নতুন প্রজন্ম গাছে উঠে এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আর করতে চাইছে না।
পিয়ারা তেঘরিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমৃত মণ্ডল জানান, এখন প্লাস্টিকের পাত্রের মধ্যে যে রস সংগ্রহ করা হচ্ছে, তাতে প্লাস্টিকের মধ্যে উপস্থিত পলিমার ও ক্ষুদ্র কণা, যাকে এক কথা বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক, রসের সঙ্গে মিশে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এটা ভয়ংকর বিপদের কারণ। কল্যাণী জে এন এম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, বর্তমানে চিকিৎসক ডাঃ শামিম আলম মোল্লা জানান, প্লাস্টিকের বোতল আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলি মানবদেহে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধিও এর ফলে কমে যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহারের ফলে ডায়ারিয়া ও ক্যান্সারের মতন ভয়ংকর ব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা আজাদ আলি বলেন, প্রয়োজনে গুড়ের দাম বাড়ানো হোক। পাশাপাশি প্রসাশন শিউলিদের বিশেষ সচেতনতার পাঠ দিক।