এই সময়, শিলিগুড়ি: দার্জিলিং ফের জমজমাট। তুষারপাতের পূর্বাভাস থাকায় ২৫ ডিসেম্বরের আগে থেকেই পাহাড়ে উপচে পড়ছে পর্যটকদের ভিড়। ৬০ শতাংশেরও বেশি হোটেল বুকিং হয়ে গিয়েছে। বহুদিন পরে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মুখেও চওড়া হাসি। ধসে রোহিণী ছাড়া পাহাড়ের সব রাস্তাই এখন খোলা। একই পরিস্থিতি সিকিমের ক্ষেত্রেও। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং বাগরাকোট হয়ে ৭১৭ (এ) জাতীয় সড়ক খুলে গিয়েছে। কিন্তু আচমকা বুকিং বাড়ার কারণ এটা নয়। এর পিছনে রয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের গ্যাংটকের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, 'বড়দিনে সিকিম ও দার্জিলিংয়ে স্নোফলের সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝের ১৫ দিন অনেক কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত বড়দিনে তুষারপাতের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।' বুধবারও দার্জিলিং থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। ফলে অনেক পর্যটক তুষারপাত দেখার আশায় আগাম হোটেল বুক করে ফিরে আসছেন। এ বছর লা নিনার প্রভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শীত বেশি পড়ার কথা। পাহাড়েও কতটা ঠান্ডা পড়তে পারে, তা নিয়ে আলোচনা সর্বত্র।
কারণ, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই দার্জিলিংয়ের তাপমাত্রা ভোরবেলায় ৪ ডিগ্রিতে নেমে যাচ্ছে। গ্যাংটকের তাপমাত্রাও ৭ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। প্রতি বছর পর্যটকরা ঠান্ডার আমেজ নিতে এই সময়টা পাহাড়ে কাটাতে চান। এ বারে তুষারপাতের সম্ভাবনা থাকায় সেই ভিড়টা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। রাতারাতি বেড়ে গিয়েছে হোটেল বুকিং-এর হারও। পর্যটন ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, 'দার্জিলিংয়ে বরফ পড়লে সিকিম নিশ্চিত ভাবে শুকনো থাকবে না। ফলে বড়দিন এ বার পাহাড়ে জমজমাট হতে চলেছে।'
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, 'পাহাড়ে বড়দিনের বুকিং বেশ ভালো। পুজোয় যে ভাবে পর্যটন মার খেয়েছে, তার অনেকটা পুষিয়ে যেতে পারে। বড়দিনে তুষারপাত হলে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে বলে আশা করছি।' সিকিমেও হোটেল মালিকরা বেজায় খুশি। সেখানে লিজ়ে হোটেল চালানো বাঙালির সংখ্যাও কম নয়। বাঙালি পর্যটকদের ভিড়ও আবার ওই সব হোটেলেই সবচেয়ে বেশি।
স্থানীয় হোটেল মালিক কল্পক দে বলেন, 'এ বার সিকিমে বড়দিনের হোটেল বুকিং খুব ভালো। তুষারপাতের পূর্বাভাসে ভিড় আরও বাড়বে বলে আমার অনুমান।' এ সবের মধ্যেও অবশ্য মন খারাপের খবর রয়েছে। আবগারি দপ্তরের নির্দেশে তিন মাসের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে পানীয়-পিপাসুদের পছন্দের জায়গা প্লেনারিজের বার। এ ছাড়াও লোকাল সাইট সিয়িং-এ পরিদর্শন নিয়ে পাহাড়-সমতলের গাড়ি চালকদের মধ্যে শুরু নতুন সমস্যা। যদিও পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করলে সব সমস্যা মিটে যাবে বলে মত ব্যবসায়ীদের।