এই সময়: পরিবর্তন করার ফলে খরচ কমেছে, এমনটা দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু পরিবর্তন করতে কত খরচ হয়েছে? তার উত্তর মেলেনি।
নরেন্দ্র মোদীর সরকার গুগলের জি–মেল অথবা অন্য কোনও সংস্থার ই–মেলের পরিবর্তে জ়োহো মেল এবং জ়োহোর ওয়ার্কপ্লেস সফ্টওয়্যার কেন্দ্রের সব অফিসে ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়ার রোডম্যাপ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে যুক্তি দিয়েছিল মোদী সরকার। তা ছাড়া, এই পদক্ষেপের ফলে খরচ কমানো যাবে, সব তথ্য ভারতেই থাকব–– এ সব যুক্তিও দেওয়া হয়েছিল।
কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১২.৬৮ লক্ষ (ই–মেল) অ্যাকাউন্ট জ়োহো প্ল্যাটফর্মে এসেছে গত কয়েক মাসে। এই ১২ লক্ষ ৬৮ হাজার অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৭ লক্ষ ৪৫ হাজার অ্যাকাউন্ট সরকারি কর্মীদের— এমনটা কেন্দ্রের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রী জিতিন প্রসাদ বুধবার সংসদে জানিয়েছেন। কিন্তু আগের প্ল্যাটফর্ম থেকে জ়োহো প্ল্যাটফর্মে এই পরিবর্তন করতে কত খরচ হয়েছে? তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রশ্নের উত্তর সংসদে এড়িয়ে গিয়েছে মোদী সরকার।
অভিষেক প্রশ্ন করেছিলেন, অন্য প্ল্যাটফর্ম থেকে জ়োহো প্ল্যাটফর্মে এই ট্রানজ়িশনের জন্য সফ্টওয়্যার–লাইসেন্স বাবদ কত খরচ হয়েছে? নতুন প্ল্যাটফর্মের ডিজিটাল পরিকাঠামো নির্মাণ এবং তার প্রশিক্ষণের জন্য কত খরচ হয়েছে? অভিষেকের এ সব প্রশ্নের একটিরও উত্তর মোদী সরকার দেয়নি। জ়োহো প্ল্যাটফর্মকে কীসের ভিত্তিতে বাছাই করা হয়েছে, কেন্দ্রের কোন কোন শর্ত জ়োহো প্ল্যাটফর্মকে মানতে হবে, কী কী পরিষেবা জ়োহো প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে, কোনও সমস্যা তৈরি হলে বিকল্প কী ব্যবস্থা তারা রেখেছে, সুরক্ষা সংক্রান্ত বন্দোবস্তই বা কী রয়েছে তাদের–– এ সব ব্যাখ্যা দিয়েছেন জিতিন প্রসাদ। এমনকী, জ়োহোর কী কী সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান রয়েছে, লিখিত উত্তরে সে সবও জানিয়েছেন জিতিন।
মাস কয়েক আগে জ়োহো প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব প্রকাশ্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অমিত শাহ–সহ কেন্দ্রের বেশ কয়েক জন মন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের ই–মেল অ্যাকাউন্ট জ়োহো–তে পরিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু জ়োহো কর্পোরেশনের মতো একটি দেশজ (সদর দপ্তর চেন্নাইয়ে) সংস্থার হাতে কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় ই–মেল অ্যাকাউন্ট যাওয়ায় কী খরচ হয়েছে?
জ়োহো প্ল্যাটফর্মে ট্রানজ়িশনের খরচ নিয়ে সংসদে নীরব থাকার পাশাপাশি নতুন এই প্ল্যাটফর্মে সড়গড় হতে কী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে, সেটাও স্পষ্ট করেননি বিভাগীয় মন্ত্রী জিতিন প্রসাদ। খরচ ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সব প্রশ্নের উত্তর কেন মোদী সরকার এড়িয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তাদের জিজ্ঞাস্য, কেন্দ্রের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রক কি কিছু চেপে যেতে চাইছে?