থাইল্যান্ডে আটক গোয়ার নাইটক্লাব কাণ্ডে অভিযুক্ত সৌরভ এবং গৌরব লুথরা। গোয়ার নাইটক্লাব ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’-এর দুই মালিক ঘটনার পর থেকেই ছিলেন পলাতক। তদন্তে জানা গিয়েছিল, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পরেই ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যায় গোয়ার জনপ্রিয় নাইটক্লাবের মালিক লুথরা ব্রাদার্স। বুধবার তাঁদের পাসপোর্ট বাতিল করে দেওয়া হয়। তার পরেই বৃহস্পতিবার ভোরে ফুকেটে তাঁদের আটক করার খবর আসে।
মঙ্গলবারই লুথরা ভাইদের গ্রেপ্তারির জন্য কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চেয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছিল গোয়ার সরকার। তার পরেই তাঁদের পাসপোর্ট সাসপেন্ড হয়। ফলে থাইল্যান্ড থেকে অন্য কোথাও পালানোর রাস্তা তাতে বন্ধ হয়ে যায়। থাই পুলিশের সাহায্যে সৌরভ ও গৌরবকে ট্র্যাক করেন তদন্তকারীরা। এর আগে লুথরা ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে লুক-আউট সার্কুলার এবং ইন্টারপোলের ব্লু নোটিস জারি করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, গোয়া পুলিশের একটি টিম লুথরা ভাইদের হেফাজতে নিতে থাইল্যান্ড যাচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একদিন সময় লাগতে পারে বলে খবর। তবে প্রথমে তাঁদের দিল্লি আনা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ভোরে গোয়ার বার্চ রোমিও লেন নাইটক্লাবে পার্টি চলার সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। ডান্স ফ্লোরে নর্তকীর বেলি ডান্স শেষ হতে না হতেই আগুন লেগে যায় নাইট ক্লাবটিতে। বেশিরভাগ কাঠামো কাঠের হওয়ায় দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো নাইটক্লাবে। আতঙ্কে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কেউ কেউ গিয়ে আশ্রয় নেন বেসমেন্টে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা ক্লাব। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ২৫ জনের। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রায় ৭ জন।
অগ্নিকাণ্ডের পরই ক্লাব মালিকদের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু ততক্ষণে তাঁরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। বিপর্যয়ের মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে লুথরা ভাইয়েরা ব্যাগ গুছিয়ে থাইল্যান্ডে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বলে দাবি পুলিশের। তদন্তে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১১.৪৫ মিনিটে আগুন লাগার পরেই ১.১৭ মিনিটে অনলাইনে থাইল্যান্ড যাওয়ার টিকিট কেটেছিলেন লুথরা ভাইরা। তার পরেই ভোর সাড়ে ৫টায় ইন্ডিগোর 6E 1073 ফ্লাইটে দেশ ছেড়ে পালান তাঁরা।
বুধবার দিল্লির রোহিণী আদালতে ট্রানজিট অ্যান্টিসিপেটরি বেলের আবেদন করেন সৌরভ এবং গৌরবের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা এবং তনভীর আহমেদ মীর। তবে সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি আদালত। আদালতে আইনজীবীরা বলেন, ‘থাইল্যান্ডে তাঁরা রেস্টুরেন্টের সাইট দেখতে গিয়েছেন। এখন দুই ভাই আইনি রক্ষাকবচ চান, যাতে দেশে ফেরার পরে তাঁদের গ্রেপ্তার না করা হয়।’ তবে সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি আদালত।