প্রতি বছরের মতো এ বছরও সরকারি সহায়ক মূল্যের ধান কেনা শুরু করেছে খাদ্য দফতর। প্রায় দেড় মাস আগে ১ নভেম্বর থেকে জেলা জুড়ে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য ক্যাম্প খোলা হয়েছে বলে দাবি খাদ্য দফতরের। জেলা খাদ্য নিয়ামক সৈকত চক্রবর্তী বলেন, “নিয়ম মেনে সরকারি সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য স্থায়ী ক্যাম্প ও মোবাইল ক্যাম্প করে চাষিদের কাছে থেকে ধান কেনা চলছে। ক্যাম্প খোলার প্রথম দিকে ধান পাওয়া না গেলেও ১৭ নভেম্বর থেকে পুরোদমে ধান কেনার কাজ হচ্ছে।”
অন্য বছরের তুলনায় এ বার আমন ধান রোপণের সময় সেচের অভাব হয়নি। খেত থেকে ধান ঘরে ওঠা পর্যন্ত সেচের কোনও অভাব হয়নি। তবে মাঝে ধান গাছে ফুল আসার মরশুমে বাদামী শোষক পোকার আক্রমণ হয়। তাতে ফলন কিছুটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু চাষিদের তৎপরতায় লাগাতার ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করে ফলনের ক্ষতি হতে দেননি চাষিরা। এ বার ধানের ফলনও ভাল হয়েছে বলে দাবি চাষিদের। চাষি রিপন শেখ বলেন, “ধান রোপণ থেকে সেচের কোনও অভাব হয়নি। সমস্ত কিছুই হয়েছে বৃষ্টির জলে। এবং ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। আমরা সরকারি ক্যাম্পে ধান বিক্রি করছি এখনও পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি।” বর্তমানে খোলা বাজারে ১৯০০ টাকা কুইন্টাল দামে ধান বিক্রি হচ্ছে।
এ দিকে বাড়তে বাড়তে সরকারি ভাবে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়ে এই জেলায়। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায় ২০২৪-২৫ আর্থিক বর্ষে ৬ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন ধান চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে কেনা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রার থেকে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন কম ধান হয়েছিল। এ বার সেই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন করা হয়েছে বলেও খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়। জেলা চালকল ওনার্স অ্যাসোশিয়েসনের সম্পাদক জয় মারাঠি বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনেই চাষিদের কাছে থেকে ধান কেনা হচ্ছে। চাষিদের যাতে ক্ষতি না হয় সেটা আমরা সব সময় নজর রাখছি।” দেড় মাস আগে সরকারি ভাবে ধান কেনা শুরু হলেও ১৭ নভেম্বর থেকে চাষিরা নিয়মিত ভাবে ক্যাম্পে ধান বিক্রি করছেন। এখনও পর্যন্ত জেলায় ১০১৭৫০.৩৬৯ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে এবং জেলার ৬৩ হাজার ৭৪২ জন চাষি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রিতে অংশ গ্রহণ করেছেন বলেও জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানাযায়।
এ বার ক্যাম্পে ২৩৬৯ টাকা ও কিষান মাণ্ডিতে ধান বিক্রি করা হলে আরও ২০ টাকা দাম বেশি পাওয়া যাবে কুইন্টাল প্রতি দাম হবে ২০৮৯ টাকা। জেলা খাদ্য নিয়ামক সৈকত চক্রবর্তী বলেন, “আবার কৃষক বন্ধু আছে এমন চাষিদের কাছে থেকে ১৫ কুইন্টাল ধান ক্রয় করা হবে। পরে সর্বাধিক ৯০ কুইন্টাল পর্যন্ত ধান ক্রয় করা হবে। চাষিরা তাঁদের ধান সহায়ক মূল্যে বিক্রি করতে উৎসাহী।’’