এই সময়,আলিপুরদুয়ার: সাড়ে তিন দশক পরে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ল আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম ব্লকের ভুটান ও অসম লাগোয়া দুই প্রত্যন্ত গ্রাম বিত্তিবাড়ি ও বালাপাড়া। ১৯৯০ সালের বন্যায় ঘোলানি ও সংকোশ নদীর বন্যায় ভেসে গিয়েছিল দু'টি কাঠের সেতু। এতদিন ধরে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিলো ডিঙি নৌকো। বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা ওই দুই নদী প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হতো বাসিন্দাদের। গ্রামে ঢুকতে পারত না অ্যাম্বুলেন্স। এছাড়াও ওই কৃষি প্রধান গ্রাম থেকে আনাজ বাজারে নিয়ে যেতে যথেষ্ট বেগ পেতে হতো কৃষকদের। দুই গ্রামে বসবাস করেন কমপক্ষে হাজার দুই মানুষ। গ্রাম দু'টি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প সংলগ্ন হওয়ায় বন্যপ্রাণীদেরও আকছার আনাগোনা রয়েছে দুই গ্রামে।
সেতু না থাকায় বনকর্মীরাও সময়মতো সেখানে পৌঁছতে পারতেন না। শেষ পর্যন্ত ওই দুই বনগ্রামের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা নিরসনে এগিয়ে আসে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। যৌথ বনপরিচালন কমিটি ও বন সুরক্ষা কমিটির লভ্যাংশের টাকায় সম্প্রতি বালাপাড়া থেকে কুমারগ্রামের মূল ভূখণ্ডে আসার জন্য সংকোশ নদী ও বিত্তিবাড়ি থেকে কুমারগ্রামে আসার জন্য ঘোলানি নদীর উপর ৫০ মিটারের দুটি কাঠের সেতু তৈরি করে দেওয়া হয়। ফলে সমস্যা মিটেছে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের। বিত্তিবাড়িরর বাসিন্দা আনন্দ বর্মন বলেন, ‘সেতু তৈরি হওয়ায় আমরা যেনও নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছি। এতদিন ধরে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা ছিলাম আমরা। বিশেষ করে রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সমস্যার শেষ ছিল না।’
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন বলেন, ‘ইচ্ছে করলেই বন দপ্তর বনের বাইরে উন্নয়নের কাজ করতে পারে না। কিন্তু এখানে দুই গ্রামের যৌথ বন পরিচালন কমিটি তাদের লভ্যাংশের টাকা খরচ করে সেতু দুটি তৈরি করেছেন। আমরা শুধুমাত্র দিশা দেখিয়েছি।’