• ২ সপ্তাহের মধ্যে আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে ডাক্তার অনিকেতকে! 'সুপ্রিম' ধাক্কা রাজ্যের...
    ২৪ ঘন্টা | ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • রাজীব চক্রবর্তী: হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও মুখ পুড়ল রাজ্যের। চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে। নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সিলমোহর শীর্ষ আদালতের। অনিকেতের পোস্টিং মামলায় হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও জোর ধাক্কা খেল রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেকে মহেশ্বরী এবং বিচারপতি বিজয় বিশ্নোইয়ের ডিভিশন স্পষ্ট জানাল, রায়গঞ্জ নয়, আরজিকরেই পোস্টিং দিতে হবে ডাক্তার অনিকেত মাহাতকে। মেরিট অনুযায়ী পোস্টিং দিতে হবে। দু-সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশ মানতে হবে। এমনটাই নির্দেশ রাজ্যকে।

    উল্লেখ্য, আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতোকে এই বছর মে মাসে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে পোস্টিং দেয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। যে পোস্টিং নিতে অস্বীকার করেন অনিকেত। অভিযোগ করেন, এই পোস্টিং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এরকপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অনিকেত মাহাতো। হাইকোর্টের সিঙ্গল ও ডিভিশন বেঞ্চ উভয়ই জানিয়ে দেয় যে, অনিকেত মাহাতোকে আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে। সেই রায়কেই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। শীর্ষ আদালতেও অনিকেতেরই জয় হল। অনিকেতের পোস্টিং সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি জেকে মহেশ্বরী এবং বিচারপতি বিজয় বিশ্নোইয়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশের উপর কোনও হস্তক্ষেপ নয়। আরজি করের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগেই পোস্টিং দিতে হবে চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে।

    অনিকেতের পোস্টিং মামলায় এদিন সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। রাজ্যের যুক্তি ছিল, একজন সরকারি কর্মী বা চিকিৎসক, নিজের পছন্দমতো জায়গা বেছে নিতে পারেন না। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতিরা পালটা প্রশ্ন করেন, সকলের ক্ষেত্রে SOP মেনে তালিকা তৈরি হলেও, এক্ষেত্রে কেন মানা হল না? এক্ষেত্রে কেন ব্যতিক্রম হল? কেন মেধার ভিত্তিতে পোস্টিং দেওয়া হবে না? তারপরই চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে আরজি করেই পোস্টিং দেওয়ার সুপ্রিম নির্দেশ। 

    উল্লেখ্য, অনিকেতের পোস্টিং নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত গত সেপ্টেম্বর মাসে খারিজ করে দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। নির্দেশ দেন, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ নয়, আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেতকে। সিঙ্গল বেঞ্চের এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ ছিল, যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর বা এসওপি এধরনের ক্ষেত্রে মেনে চলা হয়, অনিকেতের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ-ই বহাল রাখে। শেষে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।

    প্রসঙ্গত, শুধু অনিকেত নয়, অনিকেতকে রায়গঞ্জে পোস্টিং দেওয়ার পাশাপাশি আরজি কর আন্দোলনের আরও ২ মুখ দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়াকেও যথাক্রমে মালদহের গাজোল এবং হুগলির আরামবাগে পোস্টিং দেওয়া হয়। যা নিয়েও বিতর্ক ছড়িয়েছে। পোস্টিংয়ের বিরোধিতা করে আলাদা করে মামলা করেছেন বাকিরাও। বেছে বেছে শুধুমাত্র তাঁদের তিন জনকেই দূরে পোস্টিং দেওয়ার বিষয়টিকে তাঁরা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)